সেমিতে গিয়ে হোঁচট খেল বিসিবি একাদশ

পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলে সেমিতে যাওয়া বিসিবি একাদশ ছত্তিশগড়ের কাছে হেরে ফাইনালের আগেই বিদায় নিল। ডক্টর কে তিম্মাপিয়াহ মেমোরিয়াল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বা মিনি রঞ্জি ট্রফিতে মুমিনুল হকের নেতৃত্বাধীন বিসিবি একাদশ সেমিফাইনালে হেরেছে ৭ উইকেটে। বেঙ্গালুরুতে চার দিনের ম্যাচে সফরকারীদের প্রতিপক্ষ ছিল ছত্তিশগড় রাজ্য ক্রিকেট সংঘ। ফাইনালের ওঠার ম্যাচে বিসিবি একাদশের পুঁজি ছিল ২২৭ রান। শেষ দিন প্রতিপক্ষের ৩ উইকেট ফেলতে পারে ভারতের মাটিতে আমন্ত্রিত মুমিনুলের দলটির।

প্রথম ইনিংসে বিসিবি একাদশ সব উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৩৪ রান। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ছত্তিশগড় সব উইকেট হারিয়ে তোলে ২৫৭ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে বিসিবি একাদশ অলআউট হওয়ার আগে তোলে ১৫০ রান। তাতে, শেষ দিনে ছত্রিশগড়ের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২২৭ রান। ৩ উইকেট হারিয়ে ছত্রিশগড় ম্যাচটি জিতে নেয়।

প্রথম ইনিংসে তিন ফিফটিতে বেঙ্গালুরুতে চার দিনের টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ভালো কিছুর আশা জাগিয়ে তোলে ‘বি’ গ্রুপ সেরা হয়ে শেষ চারে ওঠা বিসিবি একাদশ। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ২২৭ রানের পুঁজি নিয়েই শেষ দিনে লড়তে হয় রাব্বি, এবাদত, সাইফ, মুমিনুল, সানজামুলদের। ৫৩.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।

এর আগে আলুরের ১ নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বিসিবি একাদশের দলপতি মুমিনুল। ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও জহুরুল ইসলাম দলকে ভালো শুরু দিয়েছিলেন। ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন জহুরুল ইসলাম অমি, সাইফ হাসান এবং ইয়াসির আলি। এক রানের জন্য ফিফটির দেখা পাননি মুমিনুল। ১১১.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে বিসিবি একাদশ তোলে ৩৩৪ রান।

ওপেনিংয়ে সাইফ ও জহুরুল তোলেন ১৫৪ রান। ৭ চারে ৬০ রান করে ফেরেন জহুরুল। চোট পেয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরার আগে সাইফ ৬ চার ও ৫ ছক্কায় করেন ৯২ রান, নিজের ইনিংস আর বাড়াতে পারেননি। ইয়াসির ১৩৪ বলে ৭ বাউন্ডারিতে করেন ৬২ রান। ৬ চারে ৪৯ রান করেন অধিনায়ক মুমিনুল। ইয়াসিরকে সঙ্গে নিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৮৬ রান। সানজামুল ইসলাম কোনো রান পাননি। ৮৬ বলে চারটি চারের সাহায্যে ৩৯ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। নুরুল হাসান সোহান ১৫, আরিফুল হক ১২ রান করেন। কামরুল ইসলাম রাব্বি, শহিদুল ইসলাম আর এবাদত হোসেন দুই অঙ্কের দেখা পাননি।

ছত্তিশগড় রাজ্য ক্রিকেট সংঘের বীরপ্রতাপ সিং ২৫ ওভারে ৯২ রান দিয়ে নিয়েছেন চারটি উইকেট। পুনিত ১৮ ওভারে ৩৪ রান খরচায় পান একটি উইকেট। বিন্নি স্যামুয়েল ১০.৫ ওভারে ৫১ রান দিয়ে পান তিনটি উইকেট। শশাঙ্ক ২১ ওভারে ৪৪ রান খরচায় তুলে নেন দুটি উইকেট।

নিজেদের ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা ছত্রিশগড়ের ওপেনার রিশব তিওয়ারি ১৯২ বলে ১০টি বাউন্ডারিতে ১০০ রান করেন। আরেক ওপেনার জিভানজত সিং ৫০ বলে সাতটি চারে ৪৭ রান করে ফেরেন। ওপেনিং জুটিতে তারা তুলে নেন ৯৪ রান। তিন নম্বরে নামা আভনিশ সিং ২, আমানদীপ খারে ০ রানে বিদায় নেন। শশাঙ্ক ১৩২ বলে ১০টি চার আর একটি ছক্কার সাহায্যে করেন ৮৫ রান।

বিসিবি একাদশের হয়ে সাইফ হাসান ১৩ ওভারে ২৬ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। এরমধ্যে পর পর দুই বলে দুটি উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন সাইফ। সেঞ্চুরিয়ান ওপেনারকে রানআউটও করেছেন তিনি। সানজামুল ইসলাম ২৪ ওভারে ৬৭ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। শহিদুল ৫ ওভারে ১৯ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। এবাদত হোসেন ১৬ ওভারে ৭৩ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন। রাব্বি ৭ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। মুমিনুল ৪ ওভারে ৬ রান দিয়ে উইকেট পাননি। আরিফুল হক ৪.৩ ওভারে ১৩ রান দিয়ে দুটি উইকেট পান। আর নাজমুল হোসেন শান্ত ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট।

দ্বিতীয় ইনিংসে টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান জহুরুল, সাইফ আর মুমিনুল দুই অঙ্কের দেখা পাননি। চার নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত করেন ১১ রান। ইয়াসির আলি ২২, নুরুল হাসান সোহান ৩০, আরিফুল হক ৬৩ রান করেন। ছত্রিশগড়ের শুভাম আগরওয়াল চারটি, পুনিত তিনটি, বীরপ্রতাপ দুটি আর শশাঙ্ক একটি করে উইকেট তুলে নেন। ২২৮ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে স্বাগতিক ওপেনার রিশব তিওয়ারি ৩৯, জিভানজত সিং ৫০, আভনিশ সিং ১৯ রান করেন। আমাদীপ খারে ৮৬ আর শশাঙ্ক ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন। বিসিবি একাদশের হয়ে মুমিনুল, শান্ত আর এবাদত হোসেন একটি করে উইকেট তুলে নেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!