সেন্টমার্টিনে দিনে ৩ হাজার পর্যটক যাতায়াতের নিশ্চয়তা চান জাহাজমালিকরা

অপরিকল্পিত ও অনুমোদনবিহীন স্থাপনা এবং পর্যটকদের চাপে ঝুঁকির মুখে থাকা দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে দিনে ৩ হাজার পর্যটক নেওয়ার ‘আবদার’ করছে সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াভ)।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে শহরের অভিজাত হোটেলে ‘টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ ও পর্যটক সীমিতকরণ’ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আবদার করেন সংগঠনটি সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর।

সংবাদ সম্মেলনের তিনি বলেন, ‘সেন্টমার্টিনসহ কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ীরা গত দুই বছরে করোনার ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ঠিক এমন মুহূর্তে সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াত ও রাত্রিযাপনে অতি কড়াকড়িতে অপূরণীয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে পর্যটন খাত। স্বল্প সংখ্যক পর্যটক ব্যবস্থাপনায় দ্বীপের ১৮৮ টি আবাসিক হোটেলে নতুন সংকট দেখা দিবে। পর্যটন শিল্প বাঁচাতে সেন্টমার্টিনে দৈনিক অন্তত ৩০০০ পর্যটককে সুযোগ দিতে হবে।’
সেন্টমার্টিনে দিনে ৩ হাজার পর্যটক যাতায়াতের নিশ্চয়তা চান জাহাজমালিকরা 1
কক্সবাজারের ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম প্রাণশক্তি হচ্ছে সেন্টমার্টিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেন্টমার্টিন ঘিরেই এক তৃতীয়াংশ পর্যটকের আগমন ঘটে কক্সবাজারে। কিন্তু সেন্টমার্টিনে যদি পর্যটক সীমিত করা হয়, তাহলে কক্সবাজারে তৈরি হওয়া হোটেল-মোটেল ও পর্যটন খাতে লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগে ধস নামবে।’

তিনি বলেন, ‘ঠিক এই মুহূর্তে জাহাজ চলাচল সীমিত করার চিন্তা করছে বিআইডব্লিউটিএ। মাত্র দুইটি জাহাজ চললে কয়েক হাজার পর্যটক বঞ্চিত হবে, যার প্রভাব পড়বে পুরো পর্যটন শিল্পে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে কক্সবাজারের হোটেল মোটেল ব্যবসা। জাহাজ চলাচল বন্ধ হলেও বিকল্প পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠের নৌকায় চড়ে সেন্টমার্টিন যাবে পর্যটকরা। সুতরাং যে উদ্দেশ্যে জাহাজ চলাচল সীমিত করা হচ্ছে তার কোন সুফল আসবে না। বরং ঝুুঁকি বাড়বে পর্যটন খাতে।’

হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনার সাথে আমরা একমত এবং এসব বাস্তবায়নে মাঠে আছি। কিন্তু নানা অজুহাতে জাহাজ চলাচল এবং পর্যটক সীমিত করা হলে হোটেল ব্যবসাসহ পর্যটনখাতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। আমরা জানতে পেরেছি, সেন্টমার্টিনে অদূর ভবিষ্যতে দুইটি জাহাজ চলবে এবং ১২৫০ জন পর্যটক যাতায়াতে সুযোগ পাবে। স্বল্প সংখ্যক পর্যটক ব্যবস্থাপনায় দ্বীপের ১৮৮ টি আবাসিক হোটেলে নতুন সংকট সৃষ্টি হবে। কর্মহারা হবে কর্মকর্তা কর্মচারীরা।’

তিনি বলেন, ‘পর্যটকের যাতায়াত এবং ব্যবসা ঘিরে সেন্টমার্টিনের অন্তত ৫০০০ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে। পর্যটক সীমিত করলে তাদের জীবিকাও হুমকিতে পড়বে। এ ক্ষেত্রে জাহাজ মালিকদের সুপারিশ হলো, বর্তমান চলাচলরত ১০টি জাহাজে করে সর্বোচ্চ ৩০০০ পর্যটক যাতায়াত করবে। দ্বীপের আবাসিক হোটেলগুলোতে কক্ষ আছে ১৪০০টি। প্রতি কক্ষে একজন করে দৈনিক ১৪০০ পর্যটক সেন্টমার্টিনে রাত্রি যাপন করুক। বাকি ১৬০০ পর্যটক গন্তব্যে ফিরে আসুক। বিগত ১০ বছর ধরে এই প্রক্রিয়ায় পর্যটক যাতায়াত করে আসছে। সরকারি নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’

সাংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন স্কোয়াব সভাপতি তোফায়েল আহমেদ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেয়ারি ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপক নুর মোহাম্মদ ছিদ্দিকি, টুয়াকের কর্মকর্তা এসএ কাজল প্রমুখ।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!