সেন্টমার্টিনের সাগরপথে নদীপথের লঞ্চ, শনিবার থেকে চলবে না দুই জাহাজ
নদীবন্দর ট্রাফিক কর্মকর্তার ওপর হামলা
চরম ঝুঁকি নিয়েই সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটক নিয়ে চলাচল করছিল নদীপথের জন্য তৈরি এমভি পারিজাত ও দোয়েল পাখি-১ নামের দুটি জাহাজ। উচ্চ আদালত গত ২১ জানুয়ারি জাহাজ দুটির চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তবে অভিযোগ উঠেছে জাহাজ দুটি শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই পর্যটক নিয়ে চলাচল করেছে। এমনকি এ সময় বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদেরও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে জাহাজ দুটির বিরুদ্ধে। প্রশাসনের কড়া অবস্থানের মুখে জাহাজ দুটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার (২৫ জানুয়ারি) থেকে সেন্টমার্টিন রুটে তারা জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখবে।
জানা যায়, হাইকোর্টে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে লিভ টু আপিল নং-১৬৬/২০২০ এর আদেশ অনুযায়ী গত ২১ জানুয়ারি টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে চলাচলকারী এমভি পারিজাত (এম-০১-১১২১) ও এমভি দোয়েল পাখি-১(এম-০১-১৬৬৯) লঞ্চ দুটির রুট পারমিট ও সময়সূচি স্থগিত রাখা হয়। ১৯ জানুয়ারি রিট পিটিশনের শুনানি শেষে বিচারপতি হাসান ফয়েজ ছিদ্দিকির বেঞ্চ এই আদেশ দেন। ওই আদেশ জারির পর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ২৩ জানুয়ারি জাহাজ দুটির রুট পারমিট ও সময়সূচি স্থগিত করে।
হাইকোর্ট এই পিটিশন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এমভি পারিজাত (গ-০১-১১২১) ও এমভি দোয়েল পাখি ১ (গ-০১-১৬৬৯) এর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে চলাচল স্থগিত রাখতে আদেশ দেন। একই সাথে পিটিশনটির পুনরায় শুনানির জন্য আগামী ২ মার্চ সময় নির্ধারণ করেছেন।
এদিকে আদালতের নির্দেশনা থাকলেও শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এই জাহাজ দুটি অতিরিক্ত পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন গেছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, টেকনাফে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নৌ বন্দরের ট্রাফিক কর্মকর্তা জহির উদ্দিন ভুইয়াকে লাঞ্ছিত করে সেন্টমার্টিন গেছে এম ভি পারিজাত জাহাজ ও এমভি দোয়েল পাখি জাহাজ দুটি।
টেকনাফ নৌ-বন্দরের ট্রাফিক কর্মকর্তা জহির উদ্দিন ভুইয়া বলেন, জাহাজ দুটিকে আদালতের নির্দেশমতো না যাওয়ার কথা বলে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের লোকজনের মাধ্যমে আটকানোর চেষ্টা করা হয়। অনেকক্ষণ আটকে রাখার পরে জাহাজে থাকা যাত্রীরা একসাথে আমাদেরকে ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে তেড়ে আসলে আমরা কোনমতে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পাই। পরে কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক জাহাজ ছেড়ে দেয়।
এমভি পারিজাত ও দোয়েল পাখি জাহাজের টেকনাফের দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ সোহেল নদীবন্দর ট্রাফিক কর্মকর্তার ওপর হামলার কথা অস্বীকার করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্বেও জাহাজ ছাড়লেন কেন জানতে চাইলে, তিনি জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞার ওপর কোন কাগজপত্র তাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি বলে এড়িয়ে যান এবং শনিবার থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানান।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, জাহাজগুলো চলাচলের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলে চলাচলের প্রশ্নই উঠে না। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।