সেই সাজ্জাতকে পুলিশ নিয়ে গেল ভোররাতে, মোবাইল চেয়ে বৃদ্ধা মাকে দফায় দফায় ‘হুমকি’

ফেসবুকে বিদ্যুৎ বড়ুয়াকে প্রশ্ন ছুঁড়ে স্ট্যাটাস

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম করোনা আইসোলেশন সেন্টারের উদ্যোক্তা সাজ্জাত হোসেনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

রোববার (১৮ জুলাই) ভোর সাড়ে তিনটার দিকে ডিএমপি’র রুপনগর থানার সহায়তায় তার বোনের বাসা থেকে আটক করে তাকে মিন্টু রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন পর্যন্ত তাকে সেখানেই রাখা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও তার ছোট ভাই আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে গত ১৩ জুলাই চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানায় ও জেলার সাতকানিয়া থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয় সাজ্জাতের বিরুদ্ধে।

সাজ্জাতের বোন শামীমা আক্তার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘রাতে রূপনগর থানার এসআই সুমনসহ ডিবি পুলিশ এসে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে গেছে। তাকে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গেছে। আমি দুই ঘণ্টা মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষা করার পরও ভেতর থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। তাকে কি চট্টগ্রাম হস্তান্তর করা হবে, নাকি ঢাকায় আদালতে তোলা হবে সেটা নিশ্চিত হতে পারছিনা। এজন্য আমরা পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন।’

এই বিষয়ে রূপনগর থানার এসআই মো. সুমন চট্টগ্রাম বলেন, ‘এটা ডিবি পুলিশের অপারেশন ছিল। আপনারা সেখানে যোগাযোগ করুন।’

এদিকে সাজ্জাতকে গ্রেপ্তারের পর ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে দফায় দফায় তার বাসায় ফোন করা হচ্ছে জানিয়ে সাজ্জাতের বোন শামীমা বলেন, ‘সাজ্জাতের ফোন থেকে আমাদের বাসায় ফোন করে বলা হয়েছে তার এন্ড্রয়েড ফোনটা তাদের দিতে। তাহলে তারা সাজ্জাতকে ছেড়ে দিবে। কিন্তু যেদিন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে এবং সাজ্জাতের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেদিনই আমার মা তার কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছেন। আমার মা বলেছেন যদি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জেলে যেতে হয় তাহলে ফেসবুক ব্যবহারের দরকার নাই। রাগ করে তিনি মোবাইলটা ভেঙ্গে ফেলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু ডিবি পুলিশ বারবার ওই মোবাইলের জন্য ফোন দিচ্ছে। এমনও বলা হয়েছে যে মোবাইলটা না দিলে আমার আরও যে ভাইয়েরা আছে তাদেরও সমস্যা হবে। তো দেখুক রাখে আল্লাহ মারে কে? একটা স্ট্যাটাসের জন্য যদি…. একটা ফোনের জন্য যদি সবগুলোকে মারতে পারে, নিয়ে যাক। আলহামদুলিল্লাহ।’

প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাজ্জাত হোসেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি করোনাকালে আইসোলেশন সেন্টারের উদ্যোগ নিয়ে প্রশংসিত হন। তার আইসোলেশন সেন্টারে চট্টগ্রামের সকল রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দ সহযোগিতা করেন।

সম্প্রতি তিনি আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডাক্তার বিদ্যুৎ বড়ুয়ার নামের সাথে ‘জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ’ ব্যবহার করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করে পোস্ট দেন। ওই স্ট্যাটাসেই সাতকানিয়ার ফখরুদ্দিন নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে জড়িয়েও ‘আপত্তিকর’ কমেন্ট করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে সাতকানিয়া এবং চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়।

এআরটি/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!