জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা গুনেছেন পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মাহমুদ সাইফুল করিম ওরফে সাইফ। এছাড়া জরিমানা অনাদায়ে তাকে ৯ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। তিনি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ মার্চ) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াত এই রায় ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর আইনজীবী মোহাম্মদ হায়দার তানভীরুজ্জামান। তিনি জানান, আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দিয়েছেন আদালত। আমরা আটজন সাক্ষী ও যুক্তি উপস্থাপন করে মিথ্যা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পরিদর্শক মাহমুদ সাইফুল আমিন এক ফেসবুক পোস্ট করেন। এতে চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের জুয়ার আসর থেকে গত পাঁচ বছরে ক্লাবটির মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ১৮০ কোটি টাকা আয় করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন। ফেসবুকে এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে পোস্ট করায় মান-সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে উল্লেখ করে ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস-শামস জগলুল হোসেনের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন হুইপ সামশুল। এতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫(১)ক, ২৫ (২),৩১(১)(২) ধারায় মামলাটি দায়ের হয়।
সেইদিন আদালত বাদির জবানবন্দি নিয়ে মামলার আবেদন গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদ সাইফুলের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। মামলায় হুইপ সামশুল হক চৌধুরীসহ ৯ জন সাক্ষীর মধ্যে আটজন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন।
এদিকে ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শকের (এআইজি-পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-২) পক্ষে এআইজি (পিআইও-১) আনোয়ার হোসেন খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ঢাকার উত্তরা ১৩ এপিবিএনে কর্মরত মাহমুদ সাইফুল আমিনকে বরখাস্ত করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, জনসম্মুখে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করার দায়ে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং প্রচলিত বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা পাবেন।
এর আগে সাইফুল আমিন চট্টগ্রামের হালিশহর থানা, চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের হাজতখানাসহ বিভিন্ন থানায় কর্মরত ছিলেন।
আরএস/ডিজে