সীতাকুণ্ড উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় নাডা

প্রতিদিন ডেক্স :

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় নাডা। রবিবার সকালেই উপকূল অতিক্রম করে নিম্নচাপটি। ফলে বেলা সাড়ে এগারোটার পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলেও অনেক জায়গায় সূর্য়ের মুখ দেখা যায়।

nada

আবহাওয়া অধিদফতর তথ্যানুযায়ী, নিম্নচাপটি সকাল ছয়টার দিকে সীতাকুন্ড দিয়ে চট্টগ্রাম উপকূল দিয়ে অতিক্রম শুরু করেছিল। তবে এটি আরো উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে। এ সময় বৃষ্টি ঝড়িয়ে এটি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল আছে।

 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে যাওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরের কাজ শুরু হয়েছে। দুপুর থেকে পণ্য উঠা নামার পাশাপাশি বন্দর জেটিতে জাহাজ ভীড়তে শুরু করেছে। এর আগে শনিবার রাতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বন্দরে এর্লাট-২ জারীর পাশাপাশি পণ্য উঠানামা বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্দর জেটি থেকে সকল জাহাজ নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাওয়া হয়।

 

চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো.জাফর আলম বলেন, রোববার সকাল থেকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি সীতাকুণ্ড উপকূল অতিক্রম শুরু করে।শঙ্কা কেটে যাওয়ায় জেটিতে পণ্য উঠা-নামার কাজ শুরু হয়েছে।

 

নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে রাজধানীর সদরঘাট থেকে বড় লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ নিয়েছে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)। সকাল সাড়ে ৮টায় সদরঘাট নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

 

জয়নাল আবেদিন বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে শনিবার বিকেল থেকে সারা দেশে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু সকাল থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় এবং জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে বড় লঞ্চগুলো ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে বড় লঞ্চগুলো ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই ছোট লঞ্চগুলো সদরঘাট ছেড়ে যেতে পারবে না।

 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ লঞ্চ মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, বিআইডাব্লিউটিএ এর পক্ষ থেকে সদরঘাট থেকে বড় লঞ্চগুলো ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে সদরঘাট থেকে এখনো কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।

 

পটুয়াখালীতে বঙ্গোপসাগরে ঝড়ো হাওয়ায় দুটি ট্রলার ডুবে গেছে। এতে তিন জেলে নিখোঁজ রয়েছে এবং ৩৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রলার মালিক সমিতি। দেশের প্রায় সব কটি অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। ভোলায় নিম্নচাপের প্রভাবে ভারি বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের নির্দেশে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

 

গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, খুলনাসহ উপকূলীয় এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

 

গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্ণীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

 

উপকূলের এসব অদূরবর্তী জেলা, দ্বীপ ও চরাঞ্চলে বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। উত্তর বঙ্গোপসাগরের সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

 

পা. নি :

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!