সীতাকুণ্ডে ধর্ষণের পর হত্যা, এক আসামির মৃত্যুদণ্ড, দুইজন খালাস

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় এক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় এক আসামিকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছে আদালত। মামলার ৫ আসামির মধ্যে ২জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত, অপর ২ আসামি রায় ঘোষণার আগেই কারাগারে মৃতু্যবরণ করেন।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জেলা জজ জামিউল হায়দার এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জসিম উদ্দিন বাপ্পী (৫০) সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা এলাকার বাসিন্দা।

রায় ঘোষণার সময় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বাপ্পী এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। জামিন পাওয়া দুই আসামির মধ্যে শরীফ আহমদও উপস্থিত ছিলেন, অপর আসামি আইয়ুব খান ঘটনার পর থেকে পলাতক।

আদালত সূত্রে জানা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩) ধারায় ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি জসিমকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় আইয়ুব খান ও শরীফ আহমদ নামের দুই আসামিকে আদালত খালাস দিয়েছে। এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত দুই আসামি সরওয়ার আলম ও আবদুল মোতালেব বিচার চলাকালে কারাগারে অসুস্থ হয়ে মারা যান।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিখিল কুমার নাথ বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, অনান্য দিনের মতোই ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ বিকেলে সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা এলাকায় পাহাড়ে কাঠ কুড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হন স্থানীয় এক নারী। পরদিন সকালে কুমিরা রেলস্টেশনের কাছের একটি পাহাড়ে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

মরদেহে আঘাতের চিহ্ন মিলে। পরে ময়নাতদন্তে ধর্ষণের পর হত্যা করার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে বাদী হয়ে মামলা করেন।

ঘটনার সঙ্গে পাঁচজনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ বিভিন্ন সময় চারজনকে গ্রেপ্তার করে। আইয়ুব এখনও পলাতক। আসামি জসীম উদ্দীন বাপ্পি খুনের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।

২০১৯ সালের ৪ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার জসিমকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন বিচারক।

১৭ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আজ আদালত এ রায় দেন। রায়ে জসিমকে মৃত্যুদণ্ড এবং একলাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত। এছাড়া দুই আসামি সরওয়ার আলম সেরু ও আব্দুল মোতালেব লিটন মারা যাওয়ায় তাদের মামলার বিচার থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তবে আইয়ুব ও শরীফের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।

আইএমই/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!