সীতাকুণ্ডে চিকিৎসক শাহ আলম খুনের মূলহোতা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চিকিৎসক শাহ আলম হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ডাকাত দলের প্রধান নজির আহমেদ সুমন প্রকাশ কালু (২৬) নিহত হয়েছেন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) ভোরে সাড়ে ৪টায় সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে এ বন্দুকযুদ্ধে ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-৭ এর মিডিয়া উইং মাশকুর রহমান।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) র‍্যাব চিকিৎসক শাহ আলম হত্যার সঙ্গে জড়িত লেগুনা চালক ওমর ফারুকে (১৯) গ্রেপ্তার করে। পরে সে আদালত ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং হত্যার সঙ্গে জড়িতদের নাম পরিচয় প্রকাশ করে।

মাশকুর রহমান আরও বলেন, গ্রেপ্তার ওমর ফারুকের দেওয়া তথ্যের ভিক্তিতে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ডাকাত দলের মূলহোতা নজির আহমেদ সুমন প্রকাশ কালুকে আটকের জন্য সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালাতে যায় র‍্যাব। এ সময় কালু ডাকাত তার সহযোগীরা র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব পাল্টা গুলি চালালে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে কালু ডাকাতের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী পিস্তলসহ দুটি অস্ত্র ও ২৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় সীতাকুণ্ডের ছোট কুমিরা বাইপাস থেকে চিকিৎসক শাহ আলমের ভাগনে মো. ইজাব তাকে সেফ লাইনের আল মনসুর পরিবহনের একটি লেগুনাতে তুলে দেন। ইজাব ভেবেছিলেন অন্যদিনের মতো তার মামা চান্দগাঁওয়ের বাসায় পৌঁছে গেছেন। কিন্তু বাসায় না পৌঁছায় স্ত্রী-সন্তানরা ধরে নিয়েছিল ডা. শাহ আলম সীতাকুণ্ডেই অবস্থান করছেন। পরে শাহ আলমের লাশ পাওয়া যায় সীতাকুণ্ড ঘাটঘর এলাকায়।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে স্থানীয়দের দেওয়া সংবাদে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। শুক্রবার রাতে লাশ শনাক্ত হওয়ার পর শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে স্ত্রী-সন্তানরা লাশ গ্রহণ করেন।

ওইদিন রাত ১০টায় নিহত শাহ আলমের স্ত্রী বাদি হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

প্রসঙ্গত, নিহত চিকিৎসক শাহ আলম সীতাকুণ্ড কুমিরা ইউনিয়নের ছোট কুমিরার মরহুম মাস্টার আজিজুল হকের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) থেকে এমবিবিএস শেষ করে চমেকের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুল গণি শিকদারের মেয়ে অমরানা আজমিরি শিকদার কান্তার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কান্তা নগরীর মরহুম আবু শাহিদ দোভাসের মেয়ের ঘরের নাতনি। শাহ আলম-কান্তার সংসারে দুই পুত্রসন্তান রয়েছে। একজন বিবিএ প্রথম বর্ষে পড়ছেন, অপরজন দশম শ্রেণিতে।

ডা. শাহ আলম দীর্ঘ ৩০ বছর সৌদি আরবের একটি হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চলতি বছর ১৭ জানুয়ারি সীতাকুণ্ডে নিজ গ্রামে শিশুদের জন্য ‘চাইল্ড কেয়ার’ নামে একটি ক্লিনিক চালু করেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!