সিটি গ্রুপের চা বাগানে বিক্ষোভ করলো শ্রমিকরা

চা শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে চলমান আন্দোলনের কোন সুরহানা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে এমন আশ্বাসে তাদের কাজে ফেরাতে চায় চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি পক্ষ। কিন্তু তাদের আশ্বাস গ্রহণ না করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চা শ্রমিকরা। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির কর্ণফুলী চা বাগানে কাজে না গিয়ে আন্দোলন করেছে শ্রমিকরা।

জানা গেছে, আন্দোলনের ফলে ১২০ টাকা থেকে মজুরি বৃদ্ধি করে ১৪৫ টাকা করার সিদ্ধান্ত নেয় মালিকপক্ষ। এ দাবি না মেনে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। এ বিষয়ে তারা তাকিয়ে আছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের দিকেও।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে গত ৯ আগস্ট (মঙ্গলবার) সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এ কর্মসুচি পালন করছেন চট্টগ্রামের বাগানসহ সারাদেশের ২৪১টি চা বাগানে শ্রমিকরা।

এর মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগেই কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার (২২ আগস্ট) থেকে কাজে যোগদানের কথা শ্রমিকদের।

কাজে গেলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজকের দিন থেকে বেতন পাবেন। সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত ১২০ টাকায় বেতন পাবেন। বর্ধিত টাকা এরিয়াল হিসেবে সংযোজন হবে শ্রমিকদের মজুরিতে।

এদিকে এ সিদ্ধান্ত না মেনে চট্টগ্রামের কিছু বাগানের শ্রমিকদের সোমবার সকাল থেকেই আন্দোলন করতে থাকেন।

সকালে দেখা যায়, সিটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির কর্ণফুলী চা বাগান কার্যালয়ের সামনে আন্দোলন করছে শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের মধ্যে একটি পক্ষ কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে কাজে যাওয়ার প্রস্তাবে রাজি হলেও আরেকটি পক্ষ কাজে যেতে রাজি হয়নি।

এ সময় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের চট্টগ্রাম ভ্যালীর সভাপতি নিরঞ্জন নাথ মন্টু শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহবান জানালে একটি পক্ষ তাকে ‘দালাল দালাল ‘বলে স্লোগান দিতে থাকে।

অপর পক্ষের শ্রমিক নেতা প্রেম লাল মানব্রাজি বলেন, ‘আমরা এতোদিন আন্দোলন করেছি ৩০০ টাকা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে। এখন ১২০ টাকায় আবার কেন কাজে যোগ দিব। আমরা কাজে যাব না। চা শ্রমিক নেতারা মালিক পক্ষের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে।’

জানা গেছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদ নেতৃবৃন্দের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু চুক্তির ১৯ মাস অতিবাহিত হলেও সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করেনি মালিক পক্ষ। তাই তারা আন্দোলনে নেমেছেন।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের চট্টগ্রাম ভ্যালীর সভাপতি নিরঞ্জন নাথ মন্টু চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘৩০০ টাকা মজুরি আমাদের ন্যায্য দাবি। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি যেটা সিদ্ধান্ত দেন আমরা সেটা মানবো। এর আগে কাজে ফেরার জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু একটি পক্ষ তা মানতে নারাজ।’

এ বিষয়ে কর্ণফুলী চা বাগানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাজে না গিয়ে সকাল থেকে শ্রমিকরা জড়ো হয়েছিল কার্যালয়ের সামনে। পরে দুপুরের দিকে কাজে যোগ দিয়েছেন।’

এএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!