সিটি করপোরেশন ভবন ঘিরে রেখে জেলেদের মানববন্ধন বিক্ষোভ

মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শিথিল দাবি

বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছ আহরণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার দাবিতে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ সিটি করপোরেশনের (চসিক) নগর ভবনকে ঘিরে রেখে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জলদাস সম্প্রদায়। এতে ভুক্তভোগী জেলেরা জানায়, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত (৬৫ দিন) সরকার বঙ্গোপসাগরে বাণিজ্যিক ট্রলার ও সকল প্রকার যান্ত্রিক এবং অযান্ত্রিক নৌযান দ্বারা মাছ আহরণ বন্ধ ঘোষণা করেছে। মাছ আহরণ বন্ধ ঘোষণার কারণে জেলেদের আহারে-অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। তারা এ নিষেধাজ্ঞার সময়কাল ৬৫ দিন থেকে ৩০ দিন কমিয়ে নেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি মে থেকে জুলাই মাসের পরিবর্তে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চৈত্র থেকে বৈশাখ করারও দাবি জানান জেলেরা।

রোববার (১৯ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উত্তর চট্টলা উপকূলীয় মৎসজীবী জলদাস সমবায় কল্যাণ ফেডারেশনের ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে এসব দাবি তুলে ধরেন তারা। এ মানববন্ধনে উত্তর চট্টলার ৩৮ গ্রামের প্রায় ১৩০০ জন জেলে অংশ নেন।

জানা যায়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার এক নম্বর সৈয়দপুর থেকে চসিকের দক্ষিণ পতেঙ্গা পর্যন্ত আটটি থানার প্রায় ৫৩ হাজার পরিবারের বসবাস। জনসংখ্যা ৩ লাখ ৭৫ হাজার। বাংলাদেশে মৎস্য খাতে এই জলদাস সম্প্রদায়ের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার ফলে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। এ অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সহযোগিতার চাওয়ার জন্য চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সাথে দেখা করতে নগর ভবনে আসেন জলদাস সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।
আজ সকাল ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত (সাড়ে তিন ঘন্টা) নগর ভবনকে ঘিরে অবস্থান নেন তারা। তবে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এ সময় নগর ভবনে ছিলেন না। তিনি চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। উপায়ন্তর না দেখে জলদাস সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সিটি করপোরেশন ভবন ঘিরে রেখে জেলেদের মানববন্ধন বিক্ষোভ 1

স্মারকলিপিতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা ও বর্তমান আইন চট্টগ্রাম উপকূলীয় এলাকার স্বন্দ্বীপ চ্যানেলের জলদাস সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্য শিথিল এবং সরকারি জারিকৃত ওই আইন বাংলা চৈত্র ও বৈশাখ মাসে করার দাবি জানানো হয়েছে। তাদের যুক্তি, উপকূলীয় এলাকায় মাছে ডিম ও পোনা চৈত্র ও বৈশাখ মাসে ছাড়ার উপযুক্ত সময়।

স্মাকরলিপিতে সরকার কর্তৃক বঙ্গোপসাগরে বাণিজ্যিক ট্রলারের পাশাপাশি সকল প্রকার যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক নৌযান দ্বারা মাছ আহরণের বন্ধ ঘোষণা হয়েছে, তা জলদাসের কল্যাণ ও জলদাস সম্প্রদায়ের বেঁচে থাকার জন্য প্রজ্ঞাপনটি বন্ধ করার জন্য মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সংঠনের সভাপতি লিটন দাশ, সহ-সভাপতি পরিমল দাশ, সাধারণ সম্পাদক হরিদাস, সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল দাশ ও উত্তর চট্টলার ৩৮ গ্রামের অর্থ সম্পাদক তপন দাশ।

জলদাস সম্প্রদায়ের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ এবং স্মারকলিপি প্রদান সম্পর্কে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশর বা মেয়রের কিছু করার নেই। আমরা তাদের দাবি মৎস্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর পৌঁছে দেবো।

এমএ/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!