সিকিউরিটি চেক/ শাহজালালে জামা-প্যান্ট খুলে উদোম হয়ে গেলেন ইউএস বাংলার কেবিন ক্রু!

রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের এক কেবিন ক্রুকে সিকিউরিটি চেকিংয়ে বেল্ট খুলতে বললে তিনি জামা ও প্যান্টই খুলে ফেললেন। বুধবার (১২ জুন) সকাল ১১টার দিকে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে প্রি-বোর্ডিং চেকিং গেটে এই অদ্ভূত কাণ্ড ঘটেছে। অপ্রীতিকর এ ঘটনায় হতবাক হয়ে যান উপস্থিত সকলে। এ সময় ওই কেবিন ক্রু নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে তাকে বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যদের হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেয় ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বুধবার নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কেবিন ক্রুদের প্রশিক্ষণের জন্য বিমানবন্দরে নিয়ে আসে ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ। ১৯ জন কেবিন ক্রু (অভজার্ভার) প্রথমে যথাযথ নিরাপত্তা তল্লাশি ছাড়াই প্রি-বোর্ডিং চেকিং গেট অতিক্রম করেন। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের ডেকে আবার তল্লাশির মাধ্যমে ভেতরে প্রবেশের অনুরোধ জানান। এ সময় কেবিন ক্রুরা (অবজার্ভার) বিমানবন্দরে প্রবেশের কোনও অনুমোদিত কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তাকর্মীরা বিমানবন্দরের পরিচালকসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তা অবহিত করেন। একইসঙ্গে তাদের ওই স্থান থেকে সরিয়ে দেন।

জানা যায়, বুধবার সকাল ১১টার দিকে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে প্রি-বোর্ডিং চেকিং গেটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের সিনিয়র কেবিন ক্রু মো. শাহফিকুর রহমানকে (আইডি-১৭০০) আর্চওয়ের মাধ্যমে প্রবেশের অনুরোধ জানান দায়িত্বরত আনসার সদস্য। নিয়মমাফিক মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, কোট, ঘড়ি, জুতা খুলে এক্স-রে মেশিনে স্ক্রিনিংয়ের জন্য ট্রেতে রাখেন তিনি। এ সময় তাকে কোমরের বেল্ট খুলে ট্রেতে রাখতে বলা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে জামা ও প্যান্ট খুলে ফেলেন। এ ঘটনায় হতবাক হয়ে যান উপস্থিত সকলে। পরবর্তীতে তাকে এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভসেক) সদস্যরা ভেতরে প্রবেশ করতে না দিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে নেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, এ সময় শাহফিকুর রহমান এভসেক সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ করতে থাকেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে এভসেক কন্ট্রোল রুমে নেওয়া হয়।

শাহজালাল বিমানবন্দরের এভিয়েশন সিকিউরিটির কর্মকর্তারা বলেন, অনুমতি ও তল্লাশি ছাড়াই শিক্ষানবিশ ক্রুদের বিমানবন্দরে প্রবেশ করিয়েছে ইউএস-বাংলা। একজন কেবিন ক্রু তল্লাশির সময় অসদাচারণও করেছেন। ইউএস-বাংলার ফ্লাইট অপারেশনের পরিচালক মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন।

তবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন দাবি করেছেন, আনসার সদস্যদের আচরণে তাদের একজন কেবিন ক্রু বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। তখন ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি কিছু কথা বলেন। সাধারণত কেবিন ক্রুদের প্রবেশে আলাদাভাবে অনুমতি লাগে না। তাদের পোশাক ও আইডি কার্ড সঙ্গে থাকলেই হয়। আগে কখনও অনুমতির প্রয়োজন হয়নি।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে ইউএস-বাংলার এমডি বলেন, ‘ওই কেবিন ক্রু’র প্যান্টের ভেতর আরেকটি থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট ছিল। আর্চওয়েতে বেল্ট খোলার পরও ধাতব বস্তু থাকার শব্দ হচ্ছিল। তখন আনসার সদস্যদের তিনি জানান, থ্রি কোয়ার্টার প্যান্টের বাটনের কারণে শব্দ হতে পারে। তখন আনসার সদস্যরা তাকে প্যান্ট খুলে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট দেখাতে বলেন। এ কারণেই তিনি প্যান্ট খুলে দেখিয়েছেন।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!