ঢাকায় ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনিকে আট বছর আগে ‘ক্রসফায়ারের নামে হত্যার’ অভিযোগে চট্টগ্রামের বর্তমান পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় ও সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ ১৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু (নিবারণ)’ আইনে মামলার আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। জনির মৃত্যুর ঘটনার সময় তারা সবাই ঢাকা মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। আছাদুজ্জামান মিয়া বর্তমানে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সেলের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জনির বাবা ইয়াকুব আলী ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ মামলার আবেদন দাখিল করেন। আবেদনে অভিযোগটি মামলা হিসাবে গ্রহণ করে বিচারবিভাগীয় তদন্ত এবং অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের জন্য ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। আবেদন দাখিলের পর জনির বাবার বক্তব্য শোনেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান।
মামলার আবেদনে কৃষ্ণপদ রায় ও আছাদুজ্জামান মিয়া ছাড়াও আরও ১৪ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়। অন্যরা হলেন— ডিবির রমনা জোনের এসআই দীপক কুমার দাস, ডিবির রমনা জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত, মো. জাহিদুল হক তালুকদার, ডিবির পরিদর্শক ফজলুর রহমান, ওহিদুজ্জামান, এসএম শাহরিয়ার হাসান, ডিবির এসআই শিহাব উদ্দিন, বাহাউদ্দিন ফারুকী, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, ডিবির কনস্টেবল মো. সোলাইমান, আবু সায়েদ, মো. লুৎফর রহমান ও খিলগাঁও থানার এসআই মো. আলাউদ্দিন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি ছিলেন তাপস কুমার পাল। অন্যদিকে বাদীর আইনজীবী ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
আট বছর পরে কেন মামলা করা হল— এমন প্রশ্নে বাদির আইনজীবী বলেন, ‘ওই ঘটনায় এর আগে মামলা করতে চাইলে বহু প্রতিবন্ধকতা ছিল। আর পুলিশ সে সময় কোনো মামলাও নেয়নি।’
২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ার জোড়পুকুরমাঠ এলাকায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন নুরুজ্জামান জনি (৩০)। খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জনি বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
ওই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে পুলিশের গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপকারীদের একজন ছিলেন জনি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ ছিল।
ডিবি পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, সেদিন বিকালে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড থেকে জনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে রাতে খিলগাঁও জোড়পুকুর বালুর মাঠ এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল। সেখানে জনির সহযোগীরা ‘হাতবোমা ছুড়লে’ পুলিশ পাল্টা গুলি করে। দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে জনি নিহত হন বলে সে সময় ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল।
সিপি