সিএমপি এবার ছাড়তেই হচ্ছে ওসি প্রণবকে, গন্তব্য হতে পারে ঢাকা সিআইডি

সরাসরি পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে এবার চট্টগ্রামের মায়া ছাড়তে হচ্ছে চাকরি জীবনের দীর্ঘ সময় ঘুরেফিরে চট্টগ্রাম নগর পুলিশে (সিএমপি) দায়িত্ব পালন করা খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরীকে। পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রণবের বিরুদ্ধে মিলেছে বিভিন্ন অভিযোগ— সিএমপির একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, পুলিশের ভাবমূর্তির স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্তদের বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে আরো জনবান্ধব করতে পুলিশ সদর দপ্তর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।

রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) সিএমপির এক উর্ধতন কর্মকর্তা প্রণবের বদলির বিষয়টি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরের এক আদেশ সিএমপিতে এসেছে। প্রণব চৌধুরী শিগগিরই ছাড়পত্র নিয়ে ঢাকায় সিআইডিতে যোগ দেবেন।

গত বছরের ১৯ এপ্রিল সিএমপির সদ্যবিদায়ী কমিশনার মাহাবুবর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব কুমার চৌধুরীকে খুলশী থানায় বদলি করা হয়েছিল।

গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা মো. বেলালকে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে হত্যা করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ওসি প্রণব। বেলালের পরিবারের দাবি, তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন খুলশী থানার ওসি। ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বেলালকে ক্রসফায়ার না দিয়ে আদালতে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু রাতেই তাকে সাজানো অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ‘হত্যা’ করে খুলশী থানা পুলিশ। যা সেই সময় চট্টগ্রাম প্রতিদিনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ওসি প্রণবের প্রশ্রয়ে খুলশী এলাকায় পাহাড় কাটার সিন্ডিকেট, লালখানবাজার, টাইগারপাসসহ বিভিন্ন এলাকার ইয়াবা সিন্ডিকেট দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরকম একটি গোপনীয় প্রতিবেদনে ওসি প্রণবকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে।

সাম্প্রতিককালে খুলশী থানা এলাকায় অসংখ্য মিনি পতিতালয় গড়ে ওঠার খবর চট্টগ্রাম প্রতিদিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। ওসব পতিতালয়ে নারীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদেরকে আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে। এর সঙ্গে খুলশী থানার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী এবং নগর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলাসহ একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপের হোতা, কিশোর গ্যাংদের গডফাদার দিদারুল আলম মাসুম লালখানবাজার এলাকায় একাধিকবার সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে পার পেয়েছিল তার নিস্ক্রিয়তার সুযোগে। তখনও প্রশ্ন উঠেছিল প্রণবের পেশাদারিত্ব নিয়ে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!