ভারী যান চলাচল/ সিএমপির নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে চট্টগ্রাম বন্দর

ঈদের আগে ও পরে ভারী যান চলাচলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বিধি-নিষেধ আরোপ করার ফলে প্রতিবছর বিপাকে পড়তে হয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে (চবক)। এর ফলে বন্দরে সৃষ্টি হয় জাহাজ ও কন্টেইনার জট। ব্যাহত হয় বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম।

জানা যায়, রমজান মাস, ঈদ উল ফিতর এবং ঈদ উল আযহার সময় চট্টগ্রাম বন্দর সংরক্ষিত এলাকার বাইরে যানজট সৃষ্টি না হওয়ার জন্য যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে সিএমপি। সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বন্দর অভিমুখী বিভিন্ন ডিপো থেকে আগত রপ্তানি পণ্য বোঝাই কনটেইনার এবং বন্দর থেকে বিভিন্ন ডিপোতে আমদানি পণ্য বোঝাই কনটেইনার চলাচলে সময় বেঁধে দেয়। এছাড়াও ঈদের তিন দিন পূর্ব থেকে পরের তিন দিন পর্যন্ত বন্দর অভিমুখী ও মহাসড়কে ভারী যানবাহন চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। ফলে ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ডেলিভারি কার্যক্রম একেবারে শূন্যের কোঠায় চলে আসে এবং ঈদের ছুটির প্রায় এক সপ্তাহ ডেলিভারি কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

অন্যদিকে, শুধুমাত্র ঈদের দিন ব্যতিত অন্যান্য দিন জাহাজের অপারেশনসহ সকল ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম চালুর রাখার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর খোলা থাকলেও যান চলাচলে উপর বিধি-নিষেধ আরোপের কারণে পণ্য/কনটেইনার বন্দর হতে বের করে নেওয়ার পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে বন্দরে কনটেইনার মজুদ সংখ্যা বেড়ে যায় এবং জায়গা সংকটের সৃষ্টি হয়।

এ অবস্থায় ঈদের আগে ও পরে ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করার ব্যাপারে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের শরণাপন্ন হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়ে গত ১৩ মে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি দাপ্তরিক পত্র দিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক।

ওই পত্রে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পরিবাহীত কনটেইনার বিভিন্ন প্রাইভেট আইসিডি, ইপিজেড এবং আমদানিকারকের চত্বরের পরিবহনের জন্য ট্রেইলার ব্যবহৃত হয়। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদারি কনটেইনার ডেলিভারি গ্রহণের ক্ষেত্রে এবং রপ্তানি পণ্য বোঝাই কনটেইনার বিভিন্ন অফডক, ইপিজেড থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজীকরণের জন্য ট্রেইলার চলাচল এবং অপারেশন নির্বিঘ্ন হওয়া প্রয়োজন। কোন কারণে এ ধরনের যান চলাচাল নিরবচ্ছিন্ন না হলে পণ্য খালাসে গতি শিথিল হয়ে যায়। এতে চট্টগ্রাম বন্দরে রক্ষিত কনটেইনার ইয়ার্ডে মজুদ সংখ্যা বেড়ে স্থান সংকট দেখা দেয় এবং জাহাজ হতে কনইেনার রিসিভিংয়ের গতি কমে জাহাজের পারফরম্যান্স বিঘ্নিত হয়। এ সময় পণ্য ডেলিভারি কম হওয়ার কারণে বন্দর অভ্যন্তরে এফসিএল (ফুল কনটেইনার লোড) ও এলসিএল কার্গোর পরিমাণ বেড়ে গিয়ে বহিঃনোঙ্গরে জাহাজের সংখ্যা ও অপেক্ষামান সময় বৃদ্ধি পায়।

ওই পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ঈদের সময় চট্টগ্রাম বন্দরে কেবল মাত্র এক দিন ক্লোজ হলিডে পালিত হয়। অর্থাৎ, ঈদের দিন জাহাজের অপারেশনসহ সকল ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ থাকে। অবশিষ্ট সরকারি ছুটির দিন চট্টগ্রাম বন্দরে সপ্তাহে সাত দিন অপারেশনাল কার্যক্রম চালু থাকে। অপারেশনাল কার্যক্রম চলাকালীন বন্দরের সাথে সম্পর্কিত সকল বন্দর ব্যবহারকারীদের বিশেষ করে ডেলিভারি কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল যানবাহনের সপ্তাহে সাত দিন চলাচল অপরিহার্য। অন্যথায়, চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনালয় কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়।

ওই পত্রে আসন্ন ঈদের সময় চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজের অপারেশনাল কার্যক্রমসহ সকল ধরনের কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার স্বার্থে বন্দরের ডেলিভারি কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ধরনের ভারী যানবাহন যেমন- টেইলার, কাভার্ড ভ্যান, ট্রাক ইত্যাদি চলাচলে সময় বেঁধে না দেওয়া এবং ঈদের তিন দিন পূর্ব থেকে পরের তিন দিন পর্যন্ত বন্দর এলাকা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করার বিষয়ে প্রয়োজনীয পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’

এমএ/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!