সালিস বৈঠকে মারধরের পর কিশোরের মৃত্যু চট্টগ্রামে

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় বেধড়ক মারধরে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবু বক্কর বাবুল নামের ১৯ বছর বয়সী এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২ নভেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধ নিয়ে সালিস বৈঠকে মারধর করা হয় আবু বক্করকে। তিনি উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কারকন গ্রামের সিকদার বাড়ির নুরুল আলমের ছেলে।

এ ঘটনায় সালিস বৈঠকের আয়োজনকারী ধর্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জাহেদুল আলম বলেন, ‘স্থানীয় মাহাবুব মাস্টারের পরিবার ও নুরুল আলমের পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে তাবিজ-কবচের বিষয় নিয়ে। কয়েকদিন আগে নুরুল আলমের স্ত্রী ও আবু বক্কর মিলে বেশ গালমন্দ করেন ও সেন্ডেল দিয়ে আঘাত করেন মাহাবু মাস্টারকে। ঘটনাটি মীমাংসার জন্য বৈঠক করে সালিস মীমাংসার আয়োজন করা হয়েছিল। বিচারে উপস্থিত মুরব্বীদের নিয়ে মীমাংসার রায় হয় মাহাবুব মাস্টার থেকে ক্ষমা চাওয়ার। এ সময় তাকে ধাক্কা দেয় মাহাবুব মাস্টারের ছেলে আরাফাত। পরে তার বিচার করা হয়। সব মীমাংসা হয়ে যায়। ছেলেটি প্রতিবন্ধি, আগে থেকেই অসুস্থ ছিল। তাই হয়তো এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে সালিসকারী আমরা কেউ তাকে আঘাত করিনি।’

প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফটিকছড়ি থানার অফিসার (ওসি) কাজী মাসুদ ইবনে আনোয়ার বলেন, ‘নুরুল আলম এবং মাহবুব মাস্টার পরস্পরের প্রতিবেশি। পরস্পরের পরিবারের সদস্যদের তাবিজ-কবজ করার সন্দেহে দুই পরিবারের মধ্যে সম্প্রতি বিরোধ শুরু হয়। গত মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মধ্যস্থতায় বিরোধ মীমাংসার বৈঠক চলছিল। বৈঠকের একপর্যায়ে মাহবুবের ছেলে আরাফাত ক্ষুব্ধ হয়ে আবু বক্করকে বেধড়ক মারধর করেন। আরাফাতের সঙ্গে পিটুনিতে আরও কেউ ছিল কি-না সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি।’

মারধরের পর রাতেই আবু বক্কর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার তথ্য জানিয়ে ওসি বলেন, ‘আবু বক্করের মুখ ও গলা ফুলে যায়। গভীর রাতে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে স্থানীয় নাজিরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে বুধবার সকালে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে সে মারা যান। হাসপাতালে গিয়ে লাশ পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!