সার্ফিং ক্লাবের নতুন নাম ‘ন ডরাই’!

কক্সবাজারের একটি সার্ফিং ক্লাবের নতুন নাম এখন ‘ন ডরাই’। নামটি এরই মধ্যে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। নানা আলোচনার পর শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) মুক্তি পাচ্ছে সার্ফিং নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘ন ডরাই’। এটি চট্টগ্রামের ভাষায় সবার উপযোগী করে নির্মিত। চলতি বছরের শুরুর দিকে সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়েছিল কান চলচ্চিত্র উৎসবে।

একজন নারী সার্ফারের জীবন নিয়ে তৈরি ছবিটির গল্প গড়ে উঠেছে সত্য ঘটনা অবলম্বনে। এর প্রায় সব দৃশ্যধারণই হয়েছে কক্সবাজারে। প্রায় সব সংলাপই চট্টগ্রামের ভাষায়। তবে নির্মাতারা জানিয়েছেন, এমনভাবে চট্টগ্রামের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে সেটা বুঝতে সমস্যা হবে না।

তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ছবিটির প্রযোজক স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল। তিনি সাবেক মন্ত্রী ও চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে।

‘ন ডরাই’ সিনেমার মুক্তি উপলক্ষে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে এর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। এর একটি ‘অ্যাডভেঞ্চার অব আয়েশা’ নামের একটি কমিক বইয়ের প্রকাশ। এবার ছবিটির প্রযোজক মাহবুব রহমান রুহেল জানিয়েছেন, কক্সবাজারের একটি সার্ফিং ক্লাবের নামকরণ করা হয়েছে ‘ন ডরাই’।

তিনি বলেন, ‘‘কক্সবাজারে আমাদের একটি সার্ফিং ক্লাব আছে, যেখানে নিয়মিত ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই ক্লাবটির নাম পরিবর্তন করে ‘ন ডরাই’ রাখা হয়েছে। ছবিটি শুধু সার্ফিং নিয়ে নয়, এটি একটি মুভমেন্টের নাম। দেশের প্রথম নারী সার্ফার নাসিমার উঠে আসার বাস্তব গল্প নিয়ে এই সিনেমা। বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তার খবর ফলাও করে ছাপে। অথচ তার এখনও তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। সামাজিক, পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সার্ফিংয়ের আইকন হয়ে ওঠার অদম্য জীবনের গল্প ‘ন ডরাই’।’’

ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র আয়েশার ভূমিকায় অভিনয় করা সুনেরা বলেন, ‘ছবিটি নিয়ে ভাষার পাশাপাশি আমাদের সার্ফিংও শিখতে হয়েছে। টানা তিন মাস আমরা সেটার প্রশিক্ষণ নিই। এটা শিখতে গিয়ে চেহারার এমন অবস্থা হয়েছে যে, অনেকদিন পর মাহবুব ভাই একবার বিচে আমাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের চিনতেই পারেননি।’

সুনেরা আরও জানান, একবার সার্ফিং বোর্ড থেকে দড়ি ছিঁড়ে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর তাৎক্ষণিক তাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা হয়।

এর আগে গত ২১ নভেম্বর ছবিটি দেখার পর সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করলেও সংলাপ নিয়ে জানিয়েছিলেন আপত্তি। ‘ন ডরাই’ নামের সিনেমাটি তৈরি হয়েছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায়। ‘আপত্তিকর’ আঞ্চলিক ভাষার এই সংলাপে সংশোধনী না আনলে ছবিটিকে সেন্সর সনদ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছিল সেন্সর বোর্ড। পরে ওইসব সংলাপে সংশোধনী আনার পর রোববার (২৫ নভেম্বর) ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান স্টার সিনেপ্লেক্সকে সনদ দিয়েছে সেন্সর বোর্ড।

চট্টগ্রামের ভাষায় আপত্তি কোথায়— সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান নিজামুল কবীর বলেছেন, ‘‘ন ডরাই’ অসাধারণ একটি সিনেমা। কিন্তু ছবির সংলাপে আমাদের কিছু আপত্তি রয়েছে। এই ছবিটি নির্মিত হয়েছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায়। চট্টগ্রামের ভাষায় এমন কিছু সংলাপ ব্যবহার করা হয়েছে যা দেশের অন্যান্য জেলার লোকদের কাছে অশ্লীল, আপত্তিকর মনে হতে পারে। বিষয়টি এমন যে— এক দেশের বুলি, আরেক দেশের গালি।’’

‘ন ডরাই’— সার্ফিং নিয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন কলকাতার শ্যামল সেনগুপ্ত। অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ, সুনেরাহ বিনতে কামাল, সাঈদ বাবু, জোসেফাইন লিন্ডেগার্ড প্রমুখ।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!