সাতকানিয়ায় মাদকাসক্তের হামলায় আওয়ামী লীগ নেতার অবস্থা গুরুতর

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য জানে আলম জামালের ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় এক মাদকাসক্ত। এতে গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত আওয়ামী লীগ নেতা জামাল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তিনি দক্ষিণ মাদার্শা খামার বাড়ি এলাকার মফজল আহমদের ছেলে।

শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার মাদার্শা এয়াজর পাড়া বায়তুর রহমান জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে বাড়ি ফেরার পথে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জানে আলম জামাল ও একই এলাকার মাদকাসক্ত আবু সুফিয়ান প্রকাশ মুছা (৪৫) মসজিদ থেকে জুমার নামাজ আদায় করে একসাথে বের হন। জামাল বাড়ির দিকে রওনা দেন। এ সময় কিছু বুঝে উঠার আগেই মাদকাসক্ত মুছা একটি ধারালো দা দিয়ে পেছন দিক থেকে জামালকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। মুছার ধারালো দায়ের কোপে জামালের মাথার দুই পাশ এবং ডান হাত কেটে গুরুতর আহত হন।

জামালের চিৎকারে মসজিদের অন্যান্য মুসল্লিরা এগিয়ে এলে হামলাকারী মুছা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা জানে আলম জামালকে উদ্ধার করে প্রথমে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

আহত জামাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চম তলার ৭৯ নং ওয়ার্ড অর্থোপেডিক বিভাগের ৫৩ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন৤

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুদ্দিন বলেন, দায়ের কোপ মাথার গভীরে প্রবেশ করায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, মাদকাসক্ত আবু সুফিয়ান প্রকাশ মুছা দায়ের কোপ দেয়ার সময় ‘তুই আমাকে জানে মেরেছিস আমি তোকে জানে মেরে ফেলব’ এ কথা বলতে থাকে।

মাদার্শা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নুরুল কবির জানান, ‘কোপ দেয়ার সময় মুছার এ কথা থেকে ধারণা করছি মুছা একই এলাকার জাকারিয়া নামের এক ব্যবসায়ীর চট্টগ্রাম শহরে দোকানে দারোয়ানের কাজ করতেন। গত কোরবানির ঈদে তার চাকরি চলে যায়। মুছার ধারণা হচ্ছে জামাল জাকারিয়াকে বলে তাকে কর্মচ্যূত করেছেন।’

আবার এলাকাবাসীদের অনেকে বলছেন ভিন্ন কথা৤ তারা মনে করছেন, জানে আলম জামালের কোন পূর্ব শত্রু হত্যার উদ্দেশ্যে মুছাকে ভাড়াটে হিসেবে ব্যবহার করেছে।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউল কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘তদন্তসাপেক্ষে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সাতকানিয়া থানার এসআই মাহমুদুল করিম ও আক্কাস আলী বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমরা উপস্থিত হয়ে ঘটনার তদন্ত করছি এবং হামলাকারীকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। হামলায় ব্যবহৃত দা ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। হামলার বিষয় সম্পর্কে এখনো সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না, তদন্ত চলছে।’

মাদার্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ ন ম সেলিম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘কী কারণে একজন ভদ্র মানুষের ওপর বর্বরোচিত হামলা করা হলে তা এখনও বুঝে উঠতে পারছি না।’

রুবেল/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!