সাতকানিয়ায় পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠছে ইটভাটা ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ

সাতকানিয়ায় পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠছে ইটভাটা ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ 1সাতকানিয়া প্রতিনিধিঃ জীববৈচিত্রে ভরা ১০৮ বর্গমাইল আয়তনের, ৪ লক্ষাধিক জনগোষ্টির বসবাসের চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা। বনাঞ্চলের জীববৈচিত্র, কৃষি জমি ধ্বংস করে উপজেলায় গড়ে উঠছে একের পর এক ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসেব মতে, সাতকানিয়ার ৫০টি ইটভাটার মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে মাত্র ৮টির। বাকি ইটভাটা গুলো চলছে ব্রীকফিল্ড মালিক সমিতির মাধ্যমে সবাইকে ম্যানেজ করে অবৈধ ভাবে।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুযায়ী আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকার এক কিলোমিটার দূরত্বে ইটভাটা স্থাপনের নিয়ম থাকলেও তার কোনো তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ইট-ভাটা। নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনি ব্যবহার ছাড়াও এসব ইট-ভাটায় জ্বালানী হিসেবে কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চলের পুড়ছে লক্ষ লক্ষ ঘনফুট কাঠ যেন দেখার কেউ নেই। ফসলি জমিতে তৈরি করা ৪২টি ইট-ভাটার নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, এতে হুমকির মুখে পড়েছে ফসল উৎপাদন, বাড়ছে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি।

এসব ইটভাটার দখলে-দূষণে নিরুপায় সাধারণ মানুষ আর পরিবেশের ক্ষতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কোমলমতি শিশু-কিশোররা। ফসলি জমির টপসয়েল কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়।প্রশাসনের নীরবতার সুযোগ নিয়ে জমির ওপরের অংশ কেটে ফেলায় উর্বরাশক্তি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইট তৈরির মূল কাঁচামাল বা মাটি সংগ্রহে উজাড় করা হচ্ছে কৃষিজমি আর বনাঞ্চল। ফলে ক’বছরের ব্যবধানেই বদলে গেছে এ জনপদের রূপ-প্রকৃতি।

এব্যাপারে জানতে চাইলে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর বিষয়টা বনবিভাগকে বলুন তারা চাইলে আমরা তাদের সাথে যুক্ত হয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব।

বনবিভাগের সাতকানিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসিস্টেন্ট কনজারভেটর অব ফরেস্ট (এসিএফ) কাজল তালুকদার মানবজমিনকে বলেন আমি আমার অধিনস্থ রেঞ্জারদের বলে দিয়েছি যাতে তারা এবিষয়ে ব্যাবস্থা নেয়।

ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটাগুলো কিভাবে চলছে এবং ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা কেন জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশন নিয়ে এসব ইটভাটা গুলো চলছে, উক্ত ইটভাটা গুলোতে কোন অভিযান পরিচালিত হলে আদালত অবমাননা হবে তাই আমরা বাধ্য হয়ে কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে পারছিনা। তবে রিট পিটিশন
শেষ হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব।
পরিবেশের এমন দখল-দূষণ বেড়ে চললে কয়েক বছরেই এ অঞ্চলে ফসল উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ার পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যঝুকি ও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!