চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার চরতী ইউনিয়নের তুলাতলীতে সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে কৃষকদের উপর গুলি চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। জামায়াতের সাবেক নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে রুহুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
সকাল ১০টার দিকে এই ঘটনায় অন্তত সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধরা হলেন আব্দুল মালেক (৫০), মো. নুরুল হাসান (৫০), ফয়েজ আহমদ (৬২), আবু তাহের (৩৮), মো. কাউছার (২৬), রুহুল আমিন (৬০) ও মো. মানিক (২০)। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা রয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কর্মরত জেলা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দীন তালুকদার বলেন, সাতকানিয়ার চরতি থেকে গুলিবিদ্ধ ৭ জনকে দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তারা ২৭ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে নুরুল হাসানের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা মামুনুর রশীদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাঙ্গু নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন রুহুল্লা চৌধুরী। উত্তোলন করা এই বালু রাখা হয়েছে স্থানীয় কৃষকদের জমিতে। দীর্ঘদিন ধরে জমিতে এভাবে বালুর স্তুপ করে রাখায় নিজেদের জমিতে চাষাবাদ করতে পারছিলেন না স্থানীয় কৃষকরা। এই বিষয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি বালু উত্তোলনকারী রুহুল্লাহ।’
সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর এই বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনকে অভিযোগ দেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সাতকানিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথা ছিল। এতে সকাল থেকে নিজেদের অভিযোগ জানাতে নদীর পাড়ে জড়ো হয়েছিলেন কৃষকরা। এই সময় রুহুল্লার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী কৃষকদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায়।
এদিকে গুলি চালানোর অভিযোগের বিষয়ে রুহুল্লা চৌধুরী বলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে অপ্রপচার চালানো হয়েছে। ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাও আমি জানি না।
বিষয়টির তিনিও সুষ্ঠু তদন্ত চান বলে জানান রুহুল্লা চৌধুরী।
এই বিষয়ে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘তুলাতলীতে সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতেই আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও এখনো জানা যায়নি কে বা কারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে।’
সিপি