তথ্য গোপন ও জালিয়াতির মাধ্যমে একই ব্যক্তি দুই জায়গার ঠিকানায় ব্যবহার করে ইজারা নিয়েছেন সরকারি কৃষি জমি। এ অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের জনতা ব্যাংকের প্রাক্তন কর্মকর্তা মাজাহারুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। সেখানে দুই নামে প্রায় ৪৮৫ শতাংশ জায়গা ইজারা নিয়েছেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইজারা নেওয়া এই কৃষিজমি কৃষি কাজে ব্যবহার না করে সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে অন্তত ৫০টি বিভিন্ন স্থাপনা। এসব স্থাপনা ভাড়া দিয়ে সেখান থেকে তার মাসিক আয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। এতে দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে সেখানকার কৃষকরা এখন প্রায় বেকার।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেওচিয়া গ্রামের মাজাহারুল হক চৌধুরী জনতা ব্যাংকের প্রাক্তন কর্মকর্তা। তিনি বর্তমানে ঢাকার বাড্ডা থানার মার্শাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট।
জানা যায়, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মৌজায় ৮৯৭ আরএস ও ৩১১ বিএস দাগ থেকে ১৯৬৬-৬৭ অর্থবছরে ৪ একর ৫০ শতক জায়গায় বন্দোবস্ত নেন মোজাম্মেল হক। ওই সময় তিনি ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরকল এলাকার আসাদ আলীর ছেলে হিসেবে। ১৯৮৬-৮৭ ও ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে পৃথকভাবে ৩৫ শতাংশ জায়গা বন্দোবস্ত নেন মাজাহারুল হক চৌধুরী। এতে ঠিকানা ব্যবহার করেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেওচিয়া ছদহা ইউনিয়নের আসাদ আলীর পুত্র হিসেবে। এতে একই ব্যক্তি দুই নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে তিন দফায় প্রায় ৪৮৫ শতাংশ বন্দোবস্ত করেন।
বিষয়টি অস্বীকার করে মাজাহারুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করছেন। আমার নাম মাজাহারুল হক চৌধুরী। অনেক আগেই ছদাহা ইউনিয়ন এলাকা থেকে সরকার থেকে বন্দোবস্ত করা হয়। সেখানে কিছু স্থাপনা করা হয়েছে। বন্দোবস্তের জায়গায় কাগজে অন্য কেউ মোজাম্মেল হকের নাম ও ঠিকানা হয়ত ঘষামাঝা করে থাকতে পারে।’
সাতকানিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপংকর বলেন, ‘৮৯৭ আরএস ও ৩১১ বিএস জায়গার বন্দোবস্তগুলো অনেক আগের। তৎকালীন সামরিক সরকারের আমলে হয়তো এগুলো নেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, ‘তথ্য গোপন করে একই উপজেলার দুই পরিচয় ও ঠিকানায় ব্যবহার করার বিষয়টি অনেক আগের বন্দোবস্ত নেওয়া। আমার কাছে কাউকে দিয়ে একটি অভিযোগ দিন, দেখে ব্যবস্থা নেবো।’
মুআ/সিপি