সাতকানিয়ার ইউপি ভোটে ১২ ইউনিয়নেই নৌকা, স্বতন্ত্র ৪

বিনা ভোটের চেয়ারম্যান চারজন

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার নির্বাচনে ১২টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এরমধ্যে চারটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পায় নৌকার প্রার্থীরা। এছাড়া দুটিতে বিদ্রোহী ও দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।

বেসরকারিভাবে নির্বাচিতরা হলেন— চরতী ইউনিয়নে মো. রুহুল্লাহ চৌধুরী (নৌকা), আমিলাইশে মোজাম্মেল হক চৌধুরী (বিদ্রোহী), নলুয়ায় মো. লেয়াকত আলী (নৌকা), কাঞ্চনায় রমজান আলী (নৌকা), খাগরিয়ায় মো. আকতার হোসেন (নৌকা), কালিয়াইশে হাফেজ আহমদ (নৌকা), ঢেমশায় মির্জা আসলাম সরওয়ার রিমন (স্বতন্ত্র), ধর্মপুরে নাছির উদ্দিন টিপু (নৌকা), বাজালিয়ায় তাপস কান্তি দত্ত (নৌকা), পশ্চিম ঢেমশায় রিদুয়ানুল ইসলাম সুমন (বিদ্রোহী), সোনাকানিয়ায় জসিম উদ্দিন (নৌকা) ও ছদাহায় মোরশেদুর রহমান চৌধুরী (স্বতন্ত্র)।

এর আগে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মাদার্শা ইউনিয়নে আবু নঈম মোহাম্মদ সেলিম (নৌকা), কেওঁচিয়া ইউনিয়নে ওসমান আলী (নৌকা), পুরানগড়ে আ ফ ম মাহবুবুল হক সিকদার (নৌকা) ও সাতকানিয়া সদরে মোহাম্মদ সেলিম (নৌকা) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

ভোটের আগের রাত থেকেই বিছিন্নভাবে সাতকানিয়ার ইউপি নির্বাচনের উত্তাপ ছড়ায়। সেই উত্তাপ আরও বাড়ে সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভোট শুরুর পর। এরপর দফায় দফায় সংঘর্ষে দুজনের প্রাণহানির মধ্য দিয়ে শেষ হয় সাতকানিয়ার ১৬ ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ। সকাল থেকে প্রায় সব ইউনিয়নে থেমে থেমে দুই পক্ষের গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ঘটনা ঘটেছে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে।

এদিকে নলুয়ায় নির্বাচনী সহিংসতায় তাসিব (১১) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া বাজালিয়ার ২ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকার প্রার্থী তাপস কান্তি দত্তের সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী শহীদুল্লাহ চৌধুরীর সমর্থকদের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে আব্দুর শুক্কুর (৩৪) নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।

ভোটের শুরুতেই খাগরিয়ার গণিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খাগরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এরপরই ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয় প্রিজাইডিং অফিসার। খাগরিয়ার ১ নং ওয়ার্ড ও ৯ নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রে থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ভরার অভিযোগ উঠে পোলিং অফিসারদের বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে সকাল থেকে কালিয়াইশ, সোনাকানিয়া, কাঞ্চনাসহ কয়েকটি ইউনিয়নে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। উত্তর কাঞ্চনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর দফায় দফায় সংর্ঘষের কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে প্রশাসন।

এদিকে সোনাকানিয়া ইউনিয়নে সকালে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম উদ্দিন চৌধুরী। এই ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরার অভিযোগ ওঠে পোলিং অফিসারদের বিরুদ্ধে।

উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে পুরানগড়, কেঁওচিয়া, সাতকানিয়া সদর ও মাদার্শা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যান্য ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৩৮ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৪২ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৫৮০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!