সাতকানিয়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ওপর হামলায় মেম্বারকে রিমান্ডে চায় পুলিশ

সাতকানিয়ার নলুয়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতির ওপর হামলার অভিযোগে ইউপি মেম্বার মোরশেদের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।

নলুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. মহিউদ্দিনের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার (২১ ডিসেম্বর) আদালতে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন সাতকানিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. জাহাঙ্গীর।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে হামলার ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে ইউপি মেম্বার মোরশেদ ও রিয়াজকে গ্রেফতার করে। হামলার শিকার মহিউদ্দিনের ছোট ভাই আজিম উদ্দিন সাতকানিয়া থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতার দুই আসামিকে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) কোর্ট থেকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

সাতকানিয়া থানার ওসি ইয়াসির আরাফাত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনার পরপরই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মিন্টু-কামালের ভাগিনা মোরশেদ ও রিয়াজ নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠানো হয়েছে।’ ঘটনাস্থলে প্রদর্শন করা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের জন্য আদালতে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। পুলিশ কোনো অন্যায়কারীকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এরা আগে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মহিউদ্দিনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত মহিউদ্দিনকে প্রথমে স্থানীয় আশশেফা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলায় মহিউদ্দিন মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন এবং হাত ও পা ভেঙে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

মহিউদ্দিনের স্বজনরা এ ঘটনার জন্য স্থানীয় মিন্টু বাহিনীকে দায়ী করেছেন। তারা অভিযোগ করেন, হামলার ঘটনাটিও ঘটেছে মিন্টু বাহিনীর টাইগার ফারুকের বাড়ির সামনে।

মহিউদ্দিনের স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, মহিউদ্দিন প্রতিদিনের মতো সোমবার রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ১০টায় নজির মাঝির দোকান থেকে নিজ বাড়ি ফেরার পথে ফারুকের বাড়ির সামনে এলেই আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা মহিউদ্দিনের ওপর হামলা চালান।

মিন্টু বাহিনীর কামাল উদ্দিনের নির্দেশে মোরশেদ মেম্বারের নেতৃত্বে টাইগার ফারুক, শিবির ক্যাডার জামশেদ, মৌলভী জোবায়ের, জামাই ফাহিম, টোকাই শহিদ, পাগলা রিয়াজ এই হামলা করেন বলে দাবি করেন তারা।

স্বজনরা অভিযোগ করেন, হামলায় মহিউদ্দিনের মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়েছে। রড ও হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে হাত ও পা ভেঙে দেওয়া হয়। হামলাকারীদের হাতে ছিল বন্দুক, দা, ছুড়ি, রড, হকিস্টিকসহ বিভিন্ন অস্ত্র। এলোপাতাড়ি মারধরের একপর্যায়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে মহিউদ্দিনকে মৃত ভেবে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

মহিউদ্দিনের ছোট ভাই আজিম উদ্দিন জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য মিন্টু বাহিনীর সন্ত্রাসীরা আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালিয়েছে। গত ইউপি নির্বাচনে মেম্বার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় তাকে হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হয়েছিল। একাধিক হামলাও চালিয়েছে। নির্বাচনের পরদিন মিন্টুর নেতৃত্বে বাড়িতে অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলি করা হয়। তখন হামলা করা হয় মহিউদ্দিন, আজিম, নাজিম আমরা তিন ভাইকে আহত করা হয়। গত ১৩ আগস্ট রাতেও বাড়িতে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয় মহিউদ্দিনকে। এসব ঘটনায় সম্প্রতি মামলা করা হলে মিন্টু বাহিনীর ক্যাডার টাইগার ফারুক, মোরশেদ মেম্বার, কামাল, শিবির ক্যাডার জামশেদ, জামাই ফাহিম, জোবায়ের, শহিদ, রিয়াজসহ আরও কয়েকজন সোমবার রাত সাড়ে ১০ টায় বাড়ি ফেরার পথে অতর্কিত হামলা করে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!