সাতকানিয়ায় আবারও বেপরোয়া মিন্টু বাহিনীর টাইগার ফারুক

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার নলুয়ায় মিন্টু বাহিনীর সন্ত্রাসী টাইগার ফারুক আবারও বেপরোয়া। সম্প্রতি অস্ত্র ও নারী নির্যাতন মামলায় জেল খেটে বের হয়ে ফারুক আবারও নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। সহযোগীদের নিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। সর্বশেষ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতিকে প্রকাশ্যে গালাগাল ও ৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জনসভায় দলীয় নেতাকর্মীদের সভায় যোগ না দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সন্ত্রাসী ফারুক নিরক্ষর ও মাদকাসক্ত। এলাকার একটি চিহ্নিত প্রভাবশালী মহলের সরাসরি ইন্ধনে ফারুক বিভিন্ন অসামাজিক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকেন। শুধু ফারুক নয়, ওই প্রভাবশালীর সন্ত্রাসী বাহিনীতে রয়েছে শিবির ক্যাডার জামশেদ, মোরশেদ মেম্বার, জোবায়ের, ফাহিম, শহীদসহ বেশকিছু উঠতি ও বখাটে যুবক এবং কিশোর। মূলত সৌদি প্রবাসী মিন্টু ও কামালের নেতৃত্বে তারা পুরো এলাকা জিম্মি করে রেখেছে। মিন্টুর নির্দেশে তারা এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে।

জানা গেছে, সন্ত্রাসী ফারুক সম্প্রতি দুইবার জেল খেটেছেন। জেল থেকে জামিনে এসেই আবারও নানাভাবে ঝামেলা তৈরি করে এলাকার লোকজনের সাথে। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের সমাবেশে যেতে বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ওই সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সন্ত্রাসী ফারুক নলুয়ার কুখ্যাত মিন্টু বাহিনীর অস্ত্রধারী ক্যাডার। ৫ নং ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে নারী নির্যাতন, অপহরণ, অস্ত্র আইন, চাঁদাবাজিসহ বেশি কিছু মামলার আসামী ফারুক ও মিন্টুর ভাগনে মেম্বার মোরশেদ আওয়ামী লীগের সমাবেশে যোগ দিতে চাওয়া বেশকিছু কর্মীকে হুমকি দিয়েছেন। হুমকি দিয়ে বলেছেন, সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কেউ সমাবেশে গেলে দেখে নেবেন। সমাবেশের আগের দিন সন্ত্রাসী ফারুক ও মোরশেদ মেম্বার ফোনে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়েছেন। এমন অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের।

৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি জাফর আহম্মদ ভুট্টো অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৪ ডিসেম্বর নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে জনসভা করেন। দলীয় কর্মসূচি সফল করতে সিনিয়র নেতারা দলের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সমাবেশে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন। তাই আমরা গাড়ি করে গ্রাম থেকে সভাস্থলে নেতাকর্মীদের নেওয়ার ব্যবস্থা করি। কিন্তু সন্ত্রাসী ফারুক ও মেম্বার মোরশেদ আমাদের কর্মীদের নানাভাবে হুমকি ধমকি দেন সমাবেশে না যাওয়ার জন্য। তাই ইচ্ছে থাকার পরও তাদের ভয়ে সমাবেশে যোগ দেননি অনেকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি আমি দলের কর্মী সমর্থকদের গাড়িতে ডেকে তুলে দেওয়ার সময় আমাকেও অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে সন্ত্রাসী ফারুক। বিশৃঙ্খলা এড়ানোর জন্য আমি তখন প্রতিবাদ করিনি। কারণ ঝামেলা হলে কারো সমাবেশে যোগ দেওয়া হবে না। তাই আমরা তাদের পাতানো ফাঁদে পা দিইনি। তবে বিষয়টি সাতকানিয়া থানার ওসিকে অবহিত করেছি।’

যোগাযোগ করলে সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ তারেক মো. আবদুল হান্নান বলেন, আমি মৌখিকভাবে এমন অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন নলুয়ার ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে জাফর আহাম্মদ ভুট্টো সভাপতি মুনসুর আহম্মদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিন্তু থানা ও ইউনিয়ন নেতাদের উপস্থিতিতে ওই কমিটি হলেও ফখরুদ্দিন মিন্টুর অনুসারীরা তা মানতে নারাজ। তার পছন্দের লোকদের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক করতে না পেরে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করে। এছাড়া নির্বাচিত সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে সন্ত্রাসী ফারুকদের লেলিয়ে দিয়ে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে। এমনকি হামলাও করা হয়। এরই রেশ ধরে পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে মিন্টু বাহিনী। সেই থেকে এখনো তারা নানাভাবে অশান্ত করে রেখেছে এলাকাকে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!