প্রকৃতিকন্যা রাঙামাটির ছাদ হিসেবে খ্যাত সাজেক ভ্যালিতে লেগেই আছে হাজারও পর্যটকের ভিড়। নতুন বছরের শুরুতেই কয়েক হাজার পর্যটক ভিড় জমিয়েছেন এখানে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উচ্চতার বাঘাইছড়ি সাজেক ভ্যালিতে সকালের সূর্যোদয়ের সাথে মেঘের মিতালী দেখতে হাজারো দর্শনার্থী ভিড় করছেন রুইলুই হেরিপ্যাড, কংলাক পাহাড় ও ঐতিহ্যবাহী লুসাই গ্রামে।
স্থানীয়দের ধারণা, গত তিন দিনে সাজেকে ধারণক্ষমতার চেয়ে চারগুণ বেশি পর্যটক এসেছেন। বাড়তি পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে রিসোর্ট ও কটেজ মালিকরা। রুম না পেয়ে অনেক নেচে গেয়ে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়ে দিচ্ছেন।
সাজেক রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেরী লুসাই বলেন, গত তিন দিনে সাজেকে প্রচুর পরিমাণ পর্যটক এসেছেন। কোনো রিসোর্ট ও কটেজ খালি নেই। ফলে অনেকে এক থেকে দুই হাজার টাকা ভাড়ায় খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতে অবস্থান নিয়েছেন।
মেঘবিলাস কটেজের মালিক শাহাদাৎ হোসেন জানান, নতুন বছরের শুরুতেই প্রচুর পরিমাণ পর্যটক এসেছেন সাজেকে। বাড়তি পর্যটকদের জায়গা দিতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। রিসোর্টের রুম ক্যাপাসিটি ৪ জন থাকলেও পর্যটকরা ৬ থেকে ৮ জন থাকতে চায়। অনেকে রুম না পেয়ে আবার ফিরেও যাচ্ছেন।
জানা গেছে, যারা রিসোর্টে জায়গা পেয়েছেন, তাদের অনেকেই এক থেকে তিন মাস আগে রুম বুকিং দিয়েছেন। বাড়তি পর্যটকের চাপে খাবার হোটেলেও প্রচন্ড চাপ পড়েছে। ফলে ভালো খাবার নিয়েও সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সাজেকের মনটানা রেস্টুরেন্টের মালিক জহিরুল ইসলাম বলেন, গত তিন দিনে সাজেকে প্রচুর পরিমাণ পর্যটক এসেছেন। তাদের অধিকাংশই মনটানা রেষ্টুরেন্টে খাবার খেয়েছেন। বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। তবে সাধ্যের ভেতর সবটুকু চেষ্টাই আমরা করছি পর্যটকদের সন্তুষ্ট করতে।
এতো ভিড়ের পরেও সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বলয় পর্যটকদের সন্তুষ্ট করছে। বাড়তি নিরাপত্তার কারণে পর্যটকরা অবাধে বিচরণ করতে পারছেন বিভিন্ন জায়গায়। ফলে শত চাপ সামলেও দিন শেষে হাসিমুখে ফিরে যাচ্ছে পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক ইমরান হোসেন বলেন, সাজেকে দেশের অন্য সব পর্যটন কেন্দ্র থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই চমৎকার। সাজেকে প্রবেশ থেকে শুরু করে সবই একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে চলে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে। পাশাপাশি সড়কে কোন যানবাহন ওভারটেকিং করতে পারে না। সারা রাতই থাকে সেনাবাহিনীর টহল। সবমিলিয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে কোন শঙ্কা নেই।
সিপি