সাগর গরম, তবু কক্সবাজারে সমুদ্রস্নানে হামলে পড়ছে মানুষ

বৈরি আবহাওয়ার কারণে উত্তাল সাগর। চলছে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত। তবু কক্সবাজারে সমুদ্রস্নানে হামলে পড়ছে মানুষ। সমুদ্র উপকূলে আঁচড়ে পড়া উত্তাল ঢেউ ও বিভিন্ন পয়েন্টে লাল পতাকা টাঙানো হলেও পর্যটকদের বেপরোয়া দৌড়ঝাঁপ থামাতে হিমশিম খাচ্ছেন নিরাপত্তা কর্মীরা।

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টসহ কয়েকটি পয়েন্টে গিয়ে এমনই চিত্র দেখা গেছে। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে অনেক পর্যটক হোটেল বন্দি হয়ে পড়েছেন বলেও জানা গেছে।

কাউসার আহমেদ নামে এক পর্যটক বলেন, বৈরি আবহাওয়ার আগাম খবর জানতাম। তবে এতটা খারাপ হবে বুঝতে পারিনি। বৃহস্পতিবার পুরোদিন হোটেলেই বসে কাটিয়েছি। কিন্তু শুক্রবার বৃষ্টি উপেক্ষা করে সৈকতে চলে এলাম।

সোনিয়া নামে আরেক পর্যটক বলেন, হোটেলে ভালো লাগছিল না। তাই বৃষ্টি ভিজে সৈকতের বালিয়াড়িতে হাঁটছি আর সৈকতের বিশাল বিশাল ঢেউ উপভোগ করছি।

রিয়াদ, আমিন ও সাদ্দাম নামে তিন যুবক বলেন, সৈকতে গোসল করতে নেমে পড়েছিলাম। কিন্তু লাইফ গার্ড কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ গোসল করতে দিল না। তারা নিরাপত্তার কথা বলে সৈকত থেকে উঠিয়ে দিল। বৈরি আবহাওয়ার কারণে আনন্দ মাটি হয়ে গেল।

এদিকে, পর্যটকের ওপর নির্ভর করে সংসার চলে সৈকতের ফটোগ্রাফার ও হকারদের।দুদিন ধরে বৈরি আবহাওয়ার কারণে বেকার হয়ে পড়েছেন তারা।

শুক্কুর নামের এক ফটোগ্রাফার বলেন, বৈরি আবহাওয়ায় সব শেষ। বৃষ্টির কারণে পর্যটকরা সৈকতে কম নামছেন। ফলে পর্যটকদের ছবি তুলতে না পেরে বসে থাকতে হচ্ছে। আর ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় সৈকতে পর্যটকদের নামতে বাধা দিচ্ছে লাইফ গার্ড কর্মীরা।

এ বিষয়ে সি-সেইভ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ জহির বলেন, গভীর নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজারকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। তাই সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। আর পর্যটকদের সৈকতে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। এর জন্য মাইকিংও করছি। কিন্তু অনেক পর্যটক নিষেধ অমান্য করে সৈকতে নেমে পড়ছেন। তারপরও চেষ্টা করছি পর্যটকদের নিরাপত্তা দিয়ে যেতে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গভীর নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। কক্সবাজারকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ১১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত আগামী দু-একদিন অব্যাহত থাকবে।

এদিকে, বৈরি আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিন ভ্রমণে গিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!