সাগরিকায় গরু বিক্রি শুরু হলেও জমে উঠেনি বাজার

চট্টগ্রামের অন্যতম প্রসিদ্ধ গরুর বাজার সাগরিকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু আসা শুরু হয়েছে চার পাঁচদিন আগে থেকেই। অনেকে এখনো ট্রাকে করে গরু আনছেন। গরুর পরিমাণ অনেক হলেও এখনো জমে উঠেনি বেচাকেনা। অল্প-স্বল্প বিক্রি হলেও তা আশানরূপ নয়। তবে ব্যবসায়ী-ইজারাদারদের আশা শুক্রবার (৯ আগস্ট) থেকে জমে উঠবে বাজার, বাড়বে বেচাকেনা।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সাগরকিা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে প্রচুর গরু এসেছে। প্যান্ডেলের ভেতর সারি সারি গরুর পাশে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। অনেকে গরুর পাশে প্যান্ডেলের সাথে মাচাংয়ে ঘুমাচ্ছেন। তবে অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা গরুকে খড়-কুড়া খাওয়ানো, গোসল করানোসহ নানান পরিচর্যায় ব্যস্ত। বাজারে প্রচুর ক্রেতা দর্শনার্থী থাকলেও তেমন বিক্রি নেই। অনেকে বাজারে এসেছেন, গরুর দরকষাকষি করছেন। সেই তুলনায় কিনছেন কম। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন আজকে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মূলত ক্রেতারা বাজারের হালচাল দেখবেন শুক্রবার (৯ আগস্ট) থেকে বাজারে বেচাকেনা বেড়ে যাবে।

যশোর থেকে তিনদিন আগে ২২টি গরু এনেছেন ব্যাপারী রায়হান। প্রতিটি গরুর মূল্য সাত থেকে দশ লাখ টাকা। এখনো কোন গরু বিক্রি হয়নি। তবে অনেকে দাম জানতে চায়। আমিনুল নামের বগুড়া থেকে আসা আরেক ব্যাপারী জানান, তিন দিন আগে ১৭টি গরু এনেছেন। প্রতিটি গরুুর মূল্য পাচঁ থেকে সাত লাখের মত। এখনো কোন গরু বিক্রি হয়নি। ভারতে হরিয়ানা জাতের পনেরটি সাদা গরু তিনদিন আগে নিয়ে এসেছেন রবিউল।‌ ‌গলায় ও পিঠে লাল কাপড় জড়ানো রাজস্থান নামক একটি সাদা গরুর দাম হাকিয়েছেন দশলাখ টাকা। তবে ক্রেতা এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছয়লাখ পর্যন্ত চেয়েছেন। তিনি জানান, ভারতীয় সাদা জাতের প্রতিটি গরুর মূল্য তিন থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত।

পার্টস ব্যবসায়ী রফিকুল আলম নামের একজনকে দেখা গেল গরুর দরদাম করছেন। তবে কেনার প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। তার সাথে আলাপকালে জানা গেল, তিনি আজকে গরু কিনবেন না, বাজারের হালচাল দেখতে এসেছেন।

বাজারের সবচেয়ে দামী গরু
প্রবেশ পথের অল্প পরেই দেখা গেল অনেকে জটলা পাকিয়ে একটি গরু দেখছেন। অনেকে গরুর ছবি তুলছেন। আবার অনেকে তুলছেন সেলফি। বাজারের সবচেয়ে দামী গরু কালো মানিককে ঘিরে এই জটলা। বোয়ালখালীর সাদীদ খামারের ফ্রিজাব জাতের কালো রঙের গরু কালো মানিকের দাম হাকিয়েছেন বিশ লাখ টাকা। গরুর দেখাশুনাকারী বাবুল চৌধুরী বলেন, এক বছর আগে কেনা কালো মানিকের নিয়মিত গোসল, খাদ্য, চিকিৎসাসহ সব ধরণের পরিচর্যা করছেন। গরুটির প্রতি মায়া পড়ে গেছে। তবে এখনো হাঁকানো দামের কাছাকাছিও কোন কাস্টমার পাননি।

বাজারের একপাশে উঠেছে ছাগল ও পাঠা। সেখানেও তেমন বিক্রি জমে উঠেনি। তবে স্টেডিয়াম রোডের ফুটপাতে গরু বাজার হওয়ার কারণে ওই রোডে যানজট লেগে আছে। রাস্তার পাশে গোবর, ময়লা পড়ে থাকায় মানুষের চলাচালে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেক ব্যবসায়ী রাস্তার উপর গরুকে খাওয়ানো ও গোসল সারছেন।

সাগরিকা বাজারের ইজারাদার মো. আবদুস সাত্তার বলেন, বাজারের সার্বিক পরিবেশ ভাল। তিনশ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা নেই। এখনো বাজার জমে উঠেনি, তবে শুক্রবার থেকে জমে উঠবে। সাগরিকা অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনরত মো. রেজাউল হোসাইন বলেন, বাজারে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা নেই। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় আমরা আমরা তৎপর আছি।

সিএম/আরিফ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!