সাংবাদিকদের তোপের মুখে পিছু হটলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

সমালোচনার মুখে হাসপাতালগুলোতে সাংবাদিকদের প্রবেশ ও তথ্য সংগ্রহ বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। নতুন নির্দেশনায় হাসপাতালের তথ্য প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা এ সংক্রান্ত বিষয়ের তথ্য বাদ দিয়ে দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) উপ-সচিব মো. আবু রায়হান মিঞার স্বাক্ষরে পুনরায় নতুন নির্দেশনাটি প্রকাশ করা হয়।

নতুন নির্দেশনায় দেখা গেছে, সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে গত ১২ জানুয়ারি দেওয়া নির্দেশনায় যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল তা বাদ দিয়ে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম এ নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেয়। তবে তার আগেই মন্ত্রণালয় এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

এ নির্দেশনাটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পর পর এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তারপরই মন্ত্রণালয় ফের নতুন করে নির্দেশনা দেয় এবং তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

সমালোচিত নিষেধাজ্ঞা প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হলে ফের মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সরকারি হাসপাতালের দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনা শীর্ষক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত চিকিৎসা দেওয়া সরকারের লক্ষ্য। নিরাপদ চিকিৎসার জন্য রোগীর সঙ্গে আসা দর্শনাথীদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। কেননা, তাদের স্বাস্থ্যবিষয়ক অজ্ঞতা এবং রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ রোধে করণীয় বিষয়ে জ্ঞানের অভাবে অধিকাংশ সময়ই কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ বা পরিস্থিতির অবনতি হয়। এ অবস্থায় দেশের সব সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হলো।’

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রত্যেক হাসপাতালে দর্শনার্থী পাস চালু করতে হবে এবং প্রতিটি পাসের জন্য নিরাপত্তা জামানত চালু করা যেতে পারে। রোগীর অসুস্থতা বিবেচনায় একজন রোগীকে সহায়তা করার জন্য সর্বোচ্চ দুইজন দর্শনার্থীকে পাস দেওয়া যেতে পারে। হাসপাতাল ত্যাগের আগেই পাস ফেরত দিয়ে দর্শনার্থী নিরাপত্তা জামানত ফেরত নিতে পারবেন। হাসপাতালের সকল চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মচারীরা বৈধ পরিচয়পত্র দৃশ্যমানভাবে বহন করবেন। আগত দর্শনার্থীদের জন্য পাস ইস্যু করার সময় নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, পরিদর্শনের কারণ ইত্যাদি তথ্য-সংবলিত রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা যেতে পারে। দর্শনার্থী বিষয়ক নিয়মাবলি রোগী বা রোগীর সাহায্যকারীকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া দর্শনার্থী বিষয়ক নিয়মাবলি সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে প্রদর্শন করবেন। ‘

প্রসঙ্গত, এর আগে ১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. আবু রায়হান মিঞা স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়েছিল গবেষণা, জরিপ, অন্য কোনও তথ্য বা সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। সংগৃহীত তথ্য বা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। বিনা অনুমতিতে হাসপাতালের ভেতরে রোগী বা স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের কোনও স্থিরচিত্র বা ভিডিওচিত্র ধারণ করতে পারবেন না। সংগৃহীত তথ্য প্রকাশের আগেই বস্তুনিষ্ঠতার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সম্মতি গ্রহণ করতে হবে।

পরবর্তীতে এ নিয়ে তোপের মুখে পড়লে নিষেধাজ্ঞা থেকে সরে আসে মন্ত্রণালয়।

এসআর/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!