সহোদর বোনের মৃত্যু কাপ্তাই হ্রদে ডুবে, হাসপাতালে তিনজন

রংপুর ও দিনাজপুর জেলা থেকে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নে আরেক বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন পুষ্প ও চায়না রাণী। সেখান থেকে এসেছেন তীর্থস্থানখ্যাত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে। তীর্থ শেষে সোমবার সকালে বেড়াতে আসেন রাঙামাটিতে। বিকেলে ট্যুরিস্ট বোট ডুবির ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সহোদরা বোনের। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়ে ভর্তি আছেন রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে।

জানা গেছে, সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ৬৪ জনের একটি পর্যটক দলটি রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে নৌ-ভ্রমণে বের হন। বিকেলে জেলা শহরের ডিসি বাংলো পাশের পুরনো গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ট্যুরিস্ট বোটটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। পরে বোটে পানি ঢুকে বোটটি ডুবতে থাকলে আশপাশের পর্যটকবাহী বোটগুলো দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া বোটের পর্যটকদের উদ্ধার করে। ৬৪ জনের মধ্যে ২ জন নিহত, ৩ আহত হন এবং ৫৯ জন সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

নিহত দুইবোন হলেন চায়না রাণী বর্মণ ও পুষ্প রাণী বর্মণ। এর মধ্যে পুষ্প রাণী দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার গোপাল চন্দ্র বর্মণের স্ত্রী। আর চায়না রাণী রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বৌদ্ধনাথ চক্রবর্তীর স্ত্রী। দুই বোন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের নিত্য ঠাকুরের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন পাঁচবিবি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনিরুল শহীদ মণ্ডল।

তিনি জানান, ‘নিহত চায়না রানী ও পুষ্প রানী আপন বোন। নিহতদের আত্মীয়-স্বজন আমাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে তারা ভগ্নিপতির বাড়িতে বেড়াতে আসেন। সেখান থেকে ওদিকে (রাঙামাটি) গিয়েছেন।’

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, ‘ট্যুরিস্ট বোট ডুবির ঘটনায় পাঁচজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। আহত তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুস্থভাবে উদ্ধার হওয়া ৫৯ জনকে আবাসিক হোটেলে পাঠানো হয়েছে। নিহত দুইজন সম্পর্কে বোন জানতে পেরেছি।’

এদিকে ট্যুরিস্ট বোট ডুবির ঘটনায় উদ্ধার হওয়া জয় চন্দ্র জানান, আমরা জয়পুরহাট থেকে শিবপূজা উপলক্ষে সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধামে আসি। সেখানে পূজা শেষে আজকে (সোমবার) সকালে রাঙামাটিতে বেড়াতে আসি। বোটযোগে ঘুরতে বের হয়ে সকালে একই জায়গা দিয়ে যাই এবং ফেরার পথে বিকালে গাছের সঙ্গে বোট ধাক্কা লেগে বোটে পানি ওঠে এবং বোটটি ডুবে যায়।

রাঙামাটির সিভিল সার্জন (সিএস) ডা. বিপাশ খীসা বলেন, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঁচজনকে আনা হলেও দুজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে, তারা দুজনই বয়স্ক মহিলা। বাকি তিনজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনজনের মধ্যে দুজন মহিলা ভালো আছেন। পুরুষ যিনি আছেন তিনি চিকিৎসাধীন, আমরা তাকে শঙ্কামুক্ত বলতে পারছি না। এ ঘটনায় খুবই দুঃখ প্রকাশ করছি।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!