সরকারের টাকা মেরে দিচ্ছে আবুল খায়ের ও বিএসআরএমসহ নামি সব প্রতিষ্ঠান

রাজস্ব ফাঁকির টাকা আদায়ে হচ্ছে মামলা

চট্টগ্রামভিত্তিক নামি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব মেরে দিয়ে নিজেরা গড়ে তুলছে সম্পদের পাহাড়। এর মধ্যে রয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপ, বিএসআরএম, টি কে গ্রুপের মতো নামি শিল্পপ্রতিষ্ঠানও। অভিযোগ এসেছে চট্টগ্রামভিত্তিক আরেক নামি শিল্পগ্রুপ এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধেও। চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।

নামি শিল্পপ্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের কনডেন্সড মিল্ক অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে তিন মামলায় ১৪ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।

অন্যদিকে চট্টগ্রামভিত্তিক আরেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (বিএসআরএম) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিএসআরএম ওয়্যারস লিমিটেডের বিরুদ্ধেও রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ তুলে মামলা করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।

কালুরঘাট শিল্প এলাকায় টি কে গ্রুপের মালিকানাধীন সামুদা কেমিক্যাল লিমিটেডের বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে মামলা হয়েছে। নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার দিল্লি অ্যালুমিনিয়ামের বিরুদ্ধে ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ৪২৫ টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। সীতাকুণ্ডের ইউরো পেট্রো প্রোডাক্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে এক মামলায় পাঁচ লাখ ৭৮ হাজার টাকা এবং অপর একটি মামলায় ২৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ তোলা হয়েছে। সীতাকুণ্ডের বড়কুমিরায় অবস্থিত রয়েল পি পি ব্যাগসের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৩১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে।

অন্যদিকে নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে এক কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৪০০ টাকা রাজস্ব ফাঁকির মামলা করা হয়েছে। বায়েজিদ নিউজপ্রিন্ট মিলস লিমিটেডের বিরুদ্ধেও হয়েছে ২২ লাখ ১২ হাজার ৩৮১ টাকা ফাঁকির মামলা। চার কোটি ৫২ লাখ ১১ হাজার ৯৪৪ টাকা অনিয়ম ও কর ফাঁকির মামলা হয়েছে চান্দগাঁও আনোয়ারা ড্রেজ অ্যান্ড ড্রেজিং ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের বিরুদ্ধেও।

এছাড়া শোকজ নোটিশ বা এসসিএন জারি করা হয়েছে আরও বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কালুরঘাট শিল্প এলাকার ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে রয়েছে দুই কোটি ৪৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ফাঁকির অভিযোগ। নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার সাজিনাজ এক্সিমপ্যাক লিমিটেডের বিরুদ্ধে রয়েছে পাঁচ কোটি ছয় লাখ ১৫ হাজার ৬৩৫ টাকা ফাঁকির অভিযোগ। কর্ণফুলী খোয়াজনগর আজিমপাড়ার ডিজিটাল প্যাকেজিং ও এক্সেসরিজের বিরুদ্ধে রয়েছে ২৩ লাখ টাকা ফাঁকির অভিযোগ।

চট্টগ্রামভিত্তিক আরেক নামি শিল্পগ্রুপ এস আলম গ্রুপের আটটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবৈধ রেয়াত বাতিলের পক্ষে প্রতিবেদন জমা পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড, এস আলম সিমেন্ট লিমিটেড, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড, এস আলম কোল্ডরোল্ড স্টিল লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ম্যানু. লিমিটেড, এস আলম রিফাইন সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম স্টিল (ইউ-১) এবং এস আলম স্টিল (ইউ-৩)।

এস আলম গ্রুপের আরেক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী চরপাথরঘাটার চেমন ইস্পাতের বিরুদ্ধেও অবৈধ রেয়াত বাতিলের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!