সম্মতির অপেক্ষায় চট্টগ্রাম উত্তর ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি

জট খুলছে আড়াই বছর পর

অবশেষে আলোর মুখ দেখছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন প্রক্রিয়া। ২০১৮ সালের ৫ মে দুই সদস্যের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেওয়ার পর দুই বছর ৪ মাসেও বিভিন্ন কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সম্ভব না হলেও এবার তা অনেকটাই চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যে কোনো সময় উত্তর চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দিতে পারে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এদিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনকে ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠছে উত্তর চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের রাজনীতি। কমিটিতে জায়গা করে নিতে জেলার বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপ।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এই ইউনিটের কমিটি অনুমোদন দিতে পারে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এর আগে গত ২৯ আগস্ট জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত শোকসভায় টেলিকনফারেন্স বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। ওই শোকসভায় কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকায় যান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সে সময় উত্তর জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে আলাপ করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কমিটি তৈরি করে রাখতে বলা হয় জেলা নেতাদের।

সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠনের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে রয়েছে। এমনকি কেন্দ্রীয় কমিটিরও বেশ কিছু পদ রয়েছে শূন্য। করোনা মহামারির কারণে এসব কার্যক্রম অঘোষিতভাবেই বন্ধ হয়ে আছে। তবে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসায় সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে নিয়মিত এসব কার্যক্রম আবার পুরোদমে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি যদি হয়, তাহলে একেবারে শুরুর দিকেই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে ২০১৯ সালের ২০ মে এক মাসের সময় বেধে দিয়ে সকল ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। সেই সময়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ তাদের কমিটি অনুমোদন করিয়ে নিলেও নিজেদের অপারগতার কথা জানিয়ে আরও ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে নেয় উত্তর জেলা ছাত্রলীগ। এর মধ্যে বিতর্কে জড়িয়ে শোভন-রাব্বানী দুজনেরই বিদায় নেওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত নেতৃত্ব দায়িত্বে আসায় পুরোপুরি থমকে যায় উত্তর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কমিটি গঠন একটা চলমান প্রক্রিয়া। করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায়নি। আমরা আমাদের কাজ এগিয়ে নিচ্ছি। তবে কমিটি গঠনের বিষয়ে এখনো কোন সুনির্দিষ্ট আলাপ আলোচনা হয়নি।’

এদিকে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এর মধ্যেই বিভিন্ন ইউনিট থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সাংসদদের সাথে আলোচনা করে জেলা কমিটির জন্য নামের তালিকা নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ ইউনিটের ক্ষেত্রেই সাংসদদের পাঠানো নামের তালিকাকে গুরুত্ব দিয়ে ১৫১ সদস্যের কমিটির তালিকা অনেকটাই চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র।

প্রসঙ্গত ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন। তুমুল সংঘর্ষে সেই সম্মেলন পণ্ড হলে ৩ মাস পরে একই বছরের ৫ মে দুই সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এক বছরের জন্য অনুমোদন দেওয়া সেই আংশিক কমিটিতে সভাপতি পদে মিরসরাইয়ের তানভীর হোসেন চৌধুরী তপু এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ফটিকছড়ির রেজাউল করিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!