সন্ত্রাসীদের নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী র্যালি করেছেন কাউন্সিলর জেসি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান দুর্নীতি, মাদক ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সমর্থনে পশ্চিম ষোলশহরে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) এ র্যালির আয়োজন করা হয়।
র্যালিতে জেসির পাশে ছিলেন সন্ত্রাসী জহির আলম । জহির নগরের পাঁচলাইশ থানার তালিকাভুক্ত আসামি। এছাড়া মাদক মামলার আসামি নুসরাত জাহানও ছিলেন র্যালিতে। র্যালিতে এদের উপস্থিতি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। র্যালির ব্যানারেও তালিকাভুক্ত আসামিদের ছবি দেখা যায়।
র্যালিতে উপস্থিত জহির পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় নুরুল আলম রাজু নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি । রাজুর খুনসহ ৫টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে । কাউন্সিলর জেসির স্বামী এস এম খালেদ বাবলু পাঁচলাইশ থানা আওয়ামী লীগের সদস্য। নুসরাত জাহান তারা নামের এক মাদক মামলার আসামিও র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন।
র্যালিতে ব্যবহৃত ব্যানারে রয়েছে শিবির ক্যাডার ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. ফিরোজের ছবি। ফিরোজ নিজেকে যুবলীগ নেতা হিসেবে দাবি করে থাকেন। ‘রিচ কিডস’ গ্যাং পরিচালনা করেন তিনি। অর্ধশতাধিক কিশোর ও তরুণ সক্রিয় এই গ্রুপে। নগরের মুরাদপুর, নাসিরাবাদ, ষোলশহর ও পাঁচলাইশ এলাকায় সক্রিয় এই গ্রুপ। ২০১১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরের রোগ নির্ণয়কেন্দ্র শেভরন থেকে ১১ লাখ টাকা লুট করে নেওয়ার ঘটনায় তাকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৩ সালের ১৯ জুলাই রাতে তিন রাউন্ড গুলিভর্তি নাইন এমএম পিস্তলসহ আবারও গ্রেফতার হন ফিরোজ। গত বছরের ২ মে নগরের সানশাইন গ্রামার স্কুলের ছাত্রী তাসফিয়ার মৃত্যুর ঘটনায়ও জেলে যান ফিরোজ।
বর্তমানে সরকারের শুদ্ধি অভিযানের কারণে ফিরোজ আত্মগোপনে আছেন বলে জানা যায়। তবে আত্মগোপনে থাকলেও তার হয়ে এলাকায় কাজ চালাচ্ছে র্যালির আয়োজক ও ফিরোজের সেকেন্ড ইন কমান্ড নুরুল বশর বিপলু । বিপলু নিজেকে সিটি কলেজ ছাত্রলীগ নেতার পরিচয় দেন। উঠতি গ্যাং লিডার হিসেবেও এলাকায় তার পরিচিতি রয়েছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ষোলশহর ও শুলকবহর ওয়ার্ড মহিলা কাউন্সিলর জেসমিন পারভিন জেসি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী এই র্যালিতে আমাকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে। কিন্তু এখানে কে সন্ত্রাসী আর কে মাদক ব্যবসায়ী বা পুলিশের তালিকাভুক্ত আসামি, তা আমি কিভাবে জানবো! নুসরাত জাহান তারা মহিলা আওয়ামী লীগনেত্রী। মাদকের সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে তিনি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, কুখ্যাত সন্ত্রাসী জহির আলমের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে। তবে সব মামলায় জহির জামিনে আছেন। তিনি সম্প্রতি কোনো মামলার আসামি হয়েছেন কি না, তা আমার জানা নেই। তবে অপরাধের সাথে জাড়ালে তাকে আমরা অবশ্যই গ্রেফতার করবো।
সিআর