সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্য গুলিতে এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা নিহত

ছিলেন সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী

সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্য গুলিতে চট্টগ্রাম ওমরগনি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নোবেল নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নে তাকে গুলি করা হয়। নিহত নাসির উদ্দিন নোবেল (৩৫) পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ড সিকদার পাড়ার আবদুল খালেক সিকদারের ছেলে।

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করলেও স্থানীয়রা বলছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীতাই তার মৃত্যু ডেকে এনেছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, জমি বিরোধের পাশাপাশি অন্য ঘটনাও থাকতে পারে। কারণ নাছির উদ্দিন নোবেল স্থানীয় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। একটি পক্ষ চাইছিল না তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক।

জানা গেছে, দুপুর ১টার দিকে পূর্ব বড় ভেওলা বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসে কথা বলছিলেন নাছির উদ্দিন নোবেল। এসময় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ স্থানীয় এনাম নামের একজন গুলি চালান। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান নাছির উদ্দিন নোবেল। এ সময় রুবেলের সঙ্গে থাকা আরো ৯ জন আহত হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মো. জোবায়ের চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের গুলিতে নাছির উদ্দিন নোবেল নামের একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো ৯ জন আহত হয়েছেন। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এজাহার দিলে মামলা নেয়া হবে। এর আগেই জড়িতদের ধরতে পুলিশের কয়েকটি টিমকে অভিযানে পাঠানো হয়েছে।

গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতরা হলেন, পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার বাসিন্দা মো. ফেরদৌসের ছেলে আজিজুল হক (৫০), আবু তাহেরের ছেলে মিজানুর রহমান (৩১) ওমর মিয়ার ছেলে সরওয়ার হোসেন (৪২), আকবর আহমদের ছেলে আবুল কালাম ইয়াসিন (২১), সিরাজ মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন (৩৫), আবুল হোসেনের ছেলে মো. শফি (৩৮), গোলাম উল ইসলামের ছেলে নুরুল কাদের (৪৬), আজহার আহমদের ছেলে জাফর আলম (৫০), মন্নু আলমের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২৪)। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার পরপরই ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন জাফর আলম এমপি। সেখানে তিনি লিখেন, ‘নাছির উদ্দিন নোবেল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না! সন্ত্রাসী যে হোক, শাস্তি পেতেই হবে। আমি এহেন ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ঘটনাস্থলের পাশেই নিজের বেদখল হয়ে যাওয়া ৯০ কড়া সম্পত্তি উদ্ধারের বিষয়ে গত বেশ কিছুদিন যাবৎ তৎপর ছিলেন নাছির। তবে সেই ঘটনার সাথে এনামের কোন সম্পৃক্ততা ছিল না। জমির ওই বিরোধকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ইন্ধনেই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।

নাছিরের চাচা আজিজুল হক আবু এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি খলিল উল্ল্যাহ চৌধুরী নামে একজনকে দায়ী করেছেন। খবর নিয়ে জানা গেছে খলিল উল্লাহ চৌধুরীও একই ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেও নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

এদিকে নিহত নাছির উদ্দিন নোবেলের লাশ এখন চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

এআরটি/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!