সদরঘাট-মাঝিরঘাটের পথে পথে ওজন স্কেলের জমজমাট ব্যবসা বাড়াচ্ছে দুর্ভোগ

রাস্তায় সকাল-সন্ধ্যা লেগেই থাকে যানজট

চট্টগ্রামের ব্যস্ততম এলাকা সদরঘাট-মাঝিরঘাট সড়ক। এই এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে প্রায় ১০টিরও বেশি পণ্যবাহী গাড়ির ওজন মাপার যন্ত্র বসানো হয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র তিনটি ছাড়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের নেই বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন। নেই ট্রাফিক বিভাগের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটও। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করে চলছে স্কেলের জমজমাট ব্যবসা।

যেখানে-সেখানে এসব স্কেলের কারণে প্রতিদিন সকাল ১০টার পর থেকে সড়কে ভিড় লেগে থাকে সারি সারি পণ্যবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের। এসব গাড়ির কারণে রাস্তায় সকাল-সন্ধ্যা লেগে থাকে যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ।

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ দেড় যুগের বেশি সময় ধরে মাঝিরঘাট এলাকায় চলছে অসাধু ব্যবসায়ীদের স্কেল ব্যবসা। কর্তৃপক্ষের নিয়মিত তদারকির অভাব ও বিএসটিআইয়ের কতিপয় অসাধু পরিদর্শকের নীরব ভূমিকায় আইন মানারও আগ্রহ নেই এসব ব্যবসায়ীদের।

পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, মাঝিরঘাট প্রতিদিন যানজটের কারণে ওই এলাকায় একবার ঢুকলে দ্বিতীয়বার ওই রাস্তা দিয়ে যেতে মন চায় না। পণ্যের ওজন মাপাতে প্রতিদিনের ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের সারি সারি লাইন থাকে দীর্ঘক্ষণ। দুই পাশে আসা গাড়ির কারণে রাস্তায় তীব্র যানজট লেগেই থাকে প্রতিনিয়ত। মাঝিরঘাট সড়কের খানাখন্দ ও যানজটে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন স্থানীয়রা।

সদরঘাট-মাঝিরঘাটের পথে পথে ওজন স্কেলের জমজমাট ব্যবসা বাড়াচ্ছে দুর্ভোগ 1

জানা যায়, ভারী পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে মাঝিরঘাট সড়কের দ্বারে দ্বারে বসিয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওজন মাপার স্কেল। তার মধ্যে হাজী ইউছুফ, মের্সাস শাহ জালাল এন্টারপ্রাইজ, আযান ডিজিটাল স্কেল ও এম আই ট্রেডিং কম্পিউটার স্কেলসহ ১০টির বেশি রয়েছে ওজন মাপার স্কেল। কর্ণফুলী নদী ঘেঁষে মূলত চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গা দখল করে বসানো হয়েছে এসব স্কেল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাঝির ঘাট সড়কের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের নেই ওজন মাপার যন্ত্রের সরকারি দপ্তরের কোনো অনুমোদন। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ থেকেও নেওয়া হয়নি কোনো সার্টিফিকেট। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকরা এসব স্কেল বসিয়েছে।

জানতে চাইলে সিএমপি দক্ষিণ বিভাগের ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) মো. মহিউদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মাঝিরঘাট এলাকায় যত্রতত্র বসেছে পণ্যবাহী গাড়ির ওজন মাপার স্কেল। প্রতিদিন এসব স্কেলে ওজন মাপাতে আসে শত শত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান। এতে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সড়কে লেগে থাকে যানজট। সেখানে দুজন ট্রাফিক সার্জেন্ট ও তিনজন ট্রাফিক কনস্টেবল সারাদিন কাজ করে যানজট নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খায়।’

তিনি বলেন, ‘এসব স্কেল বসাতে নেওয়া হয়নি ট্রাফিক পুলিশের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটও। শুধুমাত্র সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্সের ওপর নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানগুলো চালাচ্ছে স্কেল ব্যবসা।’

বিএসটিআই চট্টগ্রামের উপ পরিচালক শওকত ওসমান বলেন, ‘মাঝিরঘাট এলাকায় বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিয়ে পণ্যের ওজন মাপার স্কেল বসিয়েছে দুই থেকে তিনটি প্রতিষ্ঠান। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। ওই এলাকায় অনুমোদনহীন স্কেল বসানোর বিষয়ে আরও খোঁজ খবর নেওয়া হবে।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!