চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর সদরঘাটে ৪ নম্বর লাইটার জেটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্ট লিমিটেড।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দুপুর ১২টায় এ উপলক্ষে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে কেএসআরএমের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক করিম উদ্দিন বলেন, আমরা নিজস্ব লাইটারে গভীর সমুদ্র থেকে আমদারি করা পণ্য এই জেটির মাধ্যমে গুদামে নিয়ে যেতে পারবো। বর্তমানে চারটি লাইটারের মাধ্যমে পণ্য লোড-আনলোড করা হবে। পরবর্তীতে লাইটারের সংখ্যা ১০টিতে উন্নীত করা হবে। ফলে আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পণ্য লোড-আনলোডে গতি বাড়বে। এতে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে। ভোগান্তিও কমবে।
উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সারওয়ার জাহান রোকন বলেন, এই জেটি দিয়ে আমাদের নিজস্ব পণ্য লোড-আনলোড করা হবে। প্রয়োজনে ভাড়ার মাধ্যমে অন্য প্রতিষ্ঠানের মালামালও লোড-আনলোড করা হবে। তবে তা নির্ভর করবে আমাদের পণ্য বন্দরে থাকা না থাকার ওপর। মনে হয় না এর প্রয়োজন হবে। কারণ পুরো বছরজুড়েই আমাদের নিজস্ব পণ্য আনা নেওয়ার কার্যক্রম চলমান থাকে।
কেএসআরএমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, লাইটার জেটি চালুর মাধ্যমে কেএসআরএম ব্যবসায়িকভাবে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। পাশাপাশি বেড়েছে স্বনির্ভরতা ও সক্ষমতা। সদরঘাট ৪ নম্বর জেটি পুরোপুরি পরিচালিত হবে কেএসআরএমের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়। বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ বড় জাহাজ (মাদার ভ্যাসেল) থেকে নিজস্ব লাইটারে জেটিতে এনে খালাস করা হবে পণ্য। আমরা আশা করছি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জেটি সংক্রান্ত বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের উদ্যোগ নেবে। এতে করে আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে পারব অনেক গুণ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার এম আরিফুর রহমান বলেন, লাইটার জেটি চালুর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা যেমন বাড়বে তেমনি সম্প্রসারণ হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের। বিশেষ করে এসব জেটি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের জন্য অবারিত সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আমাদের বিশ্বাস এতে করে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে আরও বেশি আগ্রহী হবেন। এ ছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষ ইজারাদারদের জেটি পরিচালনায় বিদ্যমান সমস্যা নিরসনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অচিরেই সব সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সিনিয়র হাইড্রোগ্রাফার নাসির উদ্দিন, ডেপুটি ট্রাফিক ম্যানেজার (অপারেশন) মো. সাইফুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল হাসান চৌধুরী, পরিচালক (প্ল্যান্ট) কমোডর (অব.) শামসুল কবির এনডিসি-পিএসসি, মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন গোলাম মোস্তফা, ক্যাপ্টেন আনোয়ারুল হক, প্রধান প্রকৌশলী গোলাম মর্তুজা, এজিএম মো. মুমিনুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দরের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার জন্য ৪টি লাইটার জেটি নির্মাণ করে বেসরকারিভাবে কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেয়। সেই প্রেক্ষাপটে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে কেএসআরএম সদরঘাট ৪ নম্বর লাইটার জেটির ইজারা পায়। গত ৪ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এসব লাইটার জেটি পরিদর্শন করে চালুর জন্য ইজারাদারদের তাগাদা দেন। সেই ধারাবাহিকতায় কেএসআরএম তাদের ইজারা নেওয়া লাইটার জেটি চালু করল। অন্য তিন লাইটার জেটির ইজারাদার হলো— রুবি ফুড, বিএসআরএম এবং একেএস। পর্যায়ক্রমে এসব জেটিও চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট ইজারাদাররা।