সংসার চালাতে চট্টগ্রামে এসে উর্মি ফিরে গেলেন লাশ হয়ে

৪ মেয়ে ও তিন ছেলের মধ্যে উর্মি ছিলেন তৃতীয়। ছেলেরা বিয়ে করে যে যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। বাবা-মা ও ছোট ভাইবোনদেরকে নিয়ে অভাবের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় উর্মির বাবা মোজাম্মেল হকের। অভাবের এই সংসারের হাল ধরতেই ১৭ বছর বয়সে উর্মি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার উত্তর বড়কুপ এলাকা থেকে চট্টগ্রাম শহরে চাকরি করতে আসেন।

চট্টগ্রামের ইপিজেডের এক পোশাক কারখানায় চাকরি নিয়ে বন্দরটিলায় থাকতেন উর্মি। সেখানে বছরচারেক থাকার পর আকবরশাহের কালিরহাট এলাকায় চলে যান ১ অক্টোবর। এর মাত্র তিন দিন পর সোমবার (৪ অক্টোবর) সকালে তার রুম থেকে সাড়াশব্দ না আসলে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখে, উর্মি ফ্যানের সাথে ঝুলছে।

পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়। সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ ও লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়নি। যে সংসারের হাল ধরার জন্যই উর্মির চট্টগ্রামে আসা, আজ তাকেই জন্মস্থান কুতুবদিয়ায় ফিরে যেতে হচ্ছে লাশ হয়ে।

সলিমপুরের কালিরহাট মঞ্জুর কলোনির ২ নম্বর গলির ৭ নম্বর বাসায় থাকতেন উর্মি।

আকবরশাহ থানার এসআই সায়েম জানান, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে উর্মির ঝুলন্ত মরদেহ রশি কেটে নামাই। তারপর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। উর্মির স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। উর্মির স্বজনরা এখনও চট্টগ্রামে এসে পৌঁছায়নি।

উর্মির বাবা মোজাম্মেল হক মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার মেয়ে আমাদের দেখার জন্য চট্টগ্রামে গিয়েছিল চাকরি করতে। মাসে নিজের খরচ রেখে সব টাকা আমাদের পাঠিয়ে দিত। চারদিন আগেও উর্মি তার বড়ভাবীর সাথে ফোনে কথা বলেছে।’

তিনি বলেন, ‘মাসদুয়েক আগে বাড়ি এসেছিল। ছেলেরা বিয়ের পর তাদের নিজের সংসার হওয়ায় আমাদের দেখতো না। বাবা-মা-ছোট ভাইবোনদের জন্য সবসময় টেনশন করত আমার মেয়েটা।’

বাবার সঙ্গে কথা হচ্ছিল, ফোনের পাশে তখন উর্মির মায়ের বিলাপজড়ানো কন্ঠে ভেসে আসছিল আর্তনাদ।

আইএমই/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!