চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌর এলাকায় এক রোহিঙ্গা নাগরিকের ভোটার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আলমগীর ওরফে বার্মা আলমগীর নামে ওই রোহিঙ্গা শুধু ভোটার তালিকায় নাম উঠিয়েছেন তা নয়, বিয়ে করে এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসা করছেন ও বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। আর এ সবই তিনি করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করার মাধ্যমে।
এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, আলমগীর একজন রোহিঙ্গা নাগরিক। তিনি দোহাজারী এলাকায় বিয়ে করে শ্বশুর-শাশুড়িকে মা-বাবা সাজিয়ে ইতিমধ্যে ভোটার তালিকায় নাম উঠিয়েছেন। এলাকায় বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তিনি সিরাজ ফকির নামে স্থানীয় একজনের ওপর হামলা চালান। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তারও কিছুদিন আগে মো. আক্তার নামে এক ব্যক্তির স্ত্রী-সন্তানদের ওপর হামলা চালিয়ে জখম করে। আলমগীরের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তেড়ে যান। গায়ে হাত তোলেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই মামলা হামলায় ভয় দেখান। ফলে অনেকেই ঝামেলা এড়ানোর জন্য চুপ থাকেন। এভাবে তিনি দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বছরের পর বছর— এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
এদিকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সম্প্রতি বার্মা আলমগীরের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জেলা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে।
অভিযোগকারী ওবায়দুল আকবর মাসুম বলেন, ‘আলমগীর একজন রোহিঙ্গা নাগরিক। কিন্তু প্রকৃত তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তিনি এখন বাংলাদেশি নাগরিক হয়ে গেছেন। আলমগীর মূলত সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। এলাকার প্রভাবশালীদের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন থেকে। কেউ তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই নানাভাবে হুমকি ধমকি ও হয়রানি করা হয়।’
ওবায়দুল আকবর মাসুম বলেন, ‘এখন সে আমাকেও মামলা হামলার ভয় দেখাচ্ছে। বলে বেড়াচ্ছে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হবে।’
তবে তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমি অনেকদিন থেকে বাংলাদেশে থাকি। এসেছি টেকনাফ থেকে। পটিয়ায় ছিলাম পাঁচ বছর। দোহাজারী বসবাস করছি ২৫ বছর ধরে। আমি এলাকায় ব্যবসা করে জীবনযাপন করি। কেউ যদি আমার সঙ্গে শত্রুতা করে সেই বিচার সৃষ্টিকর্তা করবে।’
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেশব চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের কাছে হুমকি ধমকি দেওয়ার বিষয়ে করা অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা আলমগীরকে ধরে থানায় নিয়ে এসেছিলাম। সে সন্ত্রাসী ও অন্যায় কার্যকলাপে জড়াবে না বলে অঙ্গীকার করেছে। পাশাপাশি এলাকাবাসীকে মামলা হামলার ভয় দেখাবে না বলেও থানা পুলিশের কাছে অঙ্গীকার করেছে আলমগীর।’