শ্বশুরবাড়িতে আটকে বউকে নির্যাতন স্বামীর, হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানেও হামলা

বিদেশ থেকে ফিরে স্বামী জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়

গৃহবধূকে শ্বশুরবাড়িতে আটকে পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। পরকীয়ায় বাধা দেওয়া ও যৌতুক চেয়ে এই নির্যাতন চালান স্বামী ও শাশুড়ি।

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের নতুনপাড়ায় ঘটেছে এই অমানবিক ঘটনা। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর নাম রোকেয়া সুলতানা মেরী (২২)। তিনি ওই এলাকার নুরুল হকের স্ত্রী।

অভিযোগে জানা গেছে, ওই গৃহবধূকে শ্বশুরবাড়িতে দিনের পর দিন মারধর করে হাত-পা থেঁতলে ও ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে সেখানে দ্বিতীয় দফা হামলা চালান নুরুল হকের নেতৃত্বে ৫-৬ জন সন্ত্রাসী।

জানা গেছে, ১৮ জুলাই মেরীর হাত-পা থেঁতলে ও ভেঙে দিয়ে বাড়িতে আটকে রাখে স্বামী নুরুল হক ও শাশুড়ি রশিদা বেগম। মারধরের শিকার মেরীর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তার (মেরীর) বাবার বাড়িতে খবর দেন। খবর পেয়ে মেরীর ভাই সাদেকুর রহমান স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে সঙ্গে নিয়ে ২৫ জুলাই নুরুল হকের বাড়ি থেকে মেরীকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

তার হাত-পা কাঠের বাটাম দিয়ে থেতলে ও বাম হাত ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর রোববার (২৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালের রোগী কক্ষে ঢুকে ৫-৬ জন সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে আবারও হামলা চালায় নুরুল হক। সেখানে তারা মেরী, তার ভাই ও বোনসহ কয়েকজনকে আহত করেছে বলে জানান পার্শ্ববর্তী অন্যান্য রোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তৎক্ষণাৎ চকরিয়া থানা পুলিশকে জানালে থানার উপপরিদর্শক আবু সায়েম ও মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হাসপাতালে উপস্থিত হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, খুটাখালী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড উত্তর ফুলছড়ি গ্রামের আবু তালেবের মেয়ে রোকেয়া সুলতানা মেরীর বিয়ে হয় চার বছর আগে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে স্বামী নুরুল হক এবং শাশুড়ি রশিদা বেগম যৌতুক দাবি করে মারধর করতেন বলে জানান স্থানীয়রা।

এছাড়া গত ৬ মাস আগে নুরুল হক বিদেশ থেকে ফিরে এসে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে এ ঘটনা স্ত্রী মেরী জানার পর স্বামীকে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিনিয়ত তাকে মারধর করে। মেরীর বড় ভাই বশির আহমদ জানান, ইতিপূর্বে যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় সোমবার (২৬ জুলাই) সকালে চকরিয়ায় থানায় মেরীর বড় ভাই মাস্টার বশির আহমদ বাদী হয়ে নুরুল হকসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন।

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জুয়েল ইসলাম জানান, ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত এজাহার পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!