শোক কে শক্তিতে পরিনত করে জীবন চলছে উপকূলবাসীর

শোক কে শক্তিতে পরিনত করে জীবন চলছে উপকূলবাসীর 1এহসান আল-কুতুবী : ভয়াল ২৯ এপ্রিল । উপকূলের স্বজনহারা পরিবারে কান্নার দিন। ১৯৯১ সালের এই দিনে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় দেড় লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারায়। সরকারি হিসেবে প্রাণহানির সংখ্যা এক লাখ ৩৮ হাজার বলা হলেও বাস্তবে সেই সংখ্যাটা ছিল দুই লাখেরও বেশি। নিহতের সংখ্যা বিচারে পৃথিবীর ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড় গুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল এটি। প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া সেদিনের ঘূর্ণিঝড়ের থাবায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে কোটিরও বেশি মানুষ।
সেদিনের শোক কে উপকূলবাসী শক্তিতে পরিনত করে পথ চলতে চলতে ২৬ বছর পার করেছে । তারা প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে । দীর্ঘকাল সময় পেরিয়ে গেলেও তারা এখনো পায়নি তাদের স্বপ্নের শক্তিশালী বেঁিড়বাধ । তাদের দাবী, সরকার উপকূলবাসীর জন্য বেঁড়িবাধের বরাদ্ধ দিলেও নেতা নামধারী কতিপয় দূর্ণীতিবাজ ও কন্ট্রাকটর মিলে তা লুড়েপুড়ে খাই । ফলে বেঁিড়বাধ নির্মাণ হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না ।

এ ব্যাপারে উপকূলীয় উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক আকবর খান বলেন, সরকারের বরাদ্ধ যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় শক্তিশালী বেঁিড়বাধ নির্মাণ হয়না । উপকূল বাসী এখন আর চোখ ধাধানো ত্রাণ চায় না । তারা শক্তিশালী বেড়িঁবাধ চাই । আমি অবিলম্বে উপকূলের অরক্ষিত বেঁড়িবাধ গুলো দ্রুত নির্মাণে সরকারের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি ।
দিনটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠন আয়োজন করে সভা, সমাবেশ, সেমিনার ও দোয়া মাহফিল । নিম্মে আমাদের কাছে পাঠানো বার্তার পূর্ণাঙ্গ সংবাদ ।

২৯ এপ্রিল স্মৃতি ফাউন্ডেশন :
১৯৯১ সালের ২৯এপ্রিল কক্সবাজার , চট্টগ্রাম সহ বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় জেলা গুলোতে রাতের অন্ধকারে ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্মরণে রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভা ‘ অনুষ্ঠিত হয়। ২৯ এপ্রিল স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো: ইয়াহিয়া খান কুতুবীর সভাপতিত্বে এবং আতা উল্লাহ খানের পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কক্সবাজারের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি খোরশেদ আরা হক বলেছেন, কক্সবাজারের উন্নয়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।তিনি উপস্থিত তরুণদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমরাই কক্সবাজারের আগামী দিনের ভবিষৎ।কক্সবাজারবাসীর দাবি দাওয়া নিয়ে তোমাদের মাঠে থাকতে হবে।কক্সবাজারের পরিবেশ বিপর্যয়ের পরিণতি এবং পরিবেশ রক্ষা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন কক্সবাজার হতে প্রকাশিত দৈনিক রূপালী সৈকতের সম্পাদক ও বিশিষ্ট পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চার বারের নির্বাচিত মেয়র নুরুল আবচার, মেজর ডা: কবি শেখ হাবিবুর রহমান,দি কক্সবাজার ক্লাব এর প্রসিডেন্ট আবু ছৈয়দ, কবি আবদুল খালেক, বিজয় সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক আবদুল হাই সবুজ , কবি আফরোজা হাবিব হ্যাপী,ঢাবির ছাত্র নেতা ইসমাইল হোসেন,সাংবাদিক জালাল আহমদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা আবুল হোসাইন
ঢাবির ছাত্রলীগ নেতা আবচার হাসান ।এসময় শতাধিক ছাত্র জনতা উপস্থিত ছিলেন।আলোচনা শেষে ৯১’এর ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় :
ঢাকা বিস্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ আকতারুজ্জামান বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ও জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত হচ্ছে। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের আতœার শান্তি কামনা করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় গভীর শ্রদ্ধাভরে দিনটি উদযাপন করে যাবে।

কক্সবাজার-রামু ছাত্র পরিষদ, ঢাকা বিস্ববিদ্যালয় আয়োজিত ২৯ এপ্রিলের স্মরণে আয়োজিত সেমিনার ও র‌্যালিতে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে তিনি কক্সবাজার-রামুর ছাত্রদের কৃতজ্ঞতা জানান দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য। তিনি বলেন, ছাব্বিশ বছর পর আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিই প্রমাণ করে দুর্যোগ কখনো আমাদের মাথা নত করেনি। তিনি দুর্যোগ মোকাবিলায় সচেতনতা সহ বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপের উল্লেখ করেন। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইনস্টিউট অব ডিসেস্টার ম্যানেজমেন্টের পরিচালক ডঃ মাহবুবা নাসরিন। তিনি দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের যে কোন দুর্যোগে পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান লেঃ কর্নেল ফোরকান আহমেদ। তিনি তাঁর নাতিদীর্ঘ বক্তব্যে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের স্নৃতিচারণ করেন যখন তিনি সেনাবাহিনীর মেজর হিসেবে আক্রান্তাঞ্ছলে কর্মরত ছিলেন। তিনি বলেন কক্সবাজারের কোন উন্নয়ন পরিবেশকে বিপর্যস্ত করে করা হবেনা। উন্নয়নের প্রশ্নে দুর্নীতি ও পরিবেশ বিপর্যয়কে কোনভাবে প্রশ্রয় দেওয়া হবেনা বলে উল্লেখ করেন তিনি। কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের বিভিন্ন প্রকল্পের পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি। তিনি উপস্থিত ছাত্রদের উদ্দেশ্যে সবার আগে পড়াশোনা করে ভাল মানুষ হওয়ার পরামর্শ দেন ।

এ সেমিনারে বক্তব্য রাখেন রামু সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুজন শর্মা, প্রচার,প্রকাশনা ও সাহিত্য সম্পাদক মোহিব্বুল মোক্তাদীর তানিম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, কক্সবাজার-রামু ছাত্র পরিষদের সভাপতি সেলিমুল্লাহ সুজন, সাধারণ সম্পাদক খুরশেদ আলম। সঞ্ছালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোহাম্মদ জুবায়ের।

পরে রামু সমিতি, ঢাকা ও কক্সবাজার-রামু ছাত্র পরিষদ , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চবড়ঢ়ষবং ঈষরসধঃব গধৎপয ২০১৭ র‌্যালিতে অংশ নেন। উক্ত র‌্যালিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসেস্টার ম্যানেজমেন্টের ছাত্ররাও অংশ নেন। র‌্যালি শেষে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ উপাচার্য আকতারুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু সচেতনতায় যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জলবায়ু সচেতনতায় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার প্রশংসা করে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় সব দেশের একীভূত থাকার উপর জোর দেন।
আনোয়ারা :
ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, উপকূল রক্ষায় কাজে কোন ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ২৯ এপ্রিল স্মরণে বিশাল স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। রায়পুর ইউনিয়ন জনকল্যান সংস্থা নামক একটি সংগঠন এর আয়োজন করে।

সংস্থার সভাপতি এস এম জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম আলী হোসেনের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান চৌধুরী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ,পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জহির উদ্দিন,মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী চৌধুরী, রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানে আলম,রায়পুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আমীন শরীফ,আওয়ামীলীগ নেতা ফরিদুল কবির, পল্লী বিদ্যুতের পরিচালক সুগ্রীব মজুমদার ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফ-উদ-দৌল্লাহ চৌধুরী রিপণ প্রমুখ।

এর আগে সরেঙ্গা গ্রামে ২১৭ জন গ্রাহকের মাঝে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের উদ্বোধন করেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। ওই অনুষ্টানে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আনোয়ারা উপকূল রক্ষায় সরকার ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে। এই বরাদ্ধে বেড়ীবাঁধসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজ হবে। এ কাজে যেন কোন অনিয়ম না হয়, কোন প্রকার অনিয়ম সহ্য করা হবেনা। তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালের মধ্যে আনোয়ারা উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে ।

উপকূলীয় উন্নয়ন ফাউন্ডেশন :

উপকূল বাঁচলে বাংলাদশে বাঁচব।ে নদীমাত্রকি দশে ও সাগর মোহনায় বাংলাদশে। দশেরে দক্ষণি র্পূব পশ্চমি ৭১০ কলিোমটিার জুড়ে উপকূলীয় অঞ্চল। সমস্যা ও সম্ভাবনা নয়িে উপকূলবাসী যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতকি র্দুযােগ মোকাবলো করে আসছ।ে অফুরন্ত প্রাকৃতকি সম্পদ, অদক্ষ জনগোষ্ঠী কারণে ও সরকাররে সংশ্লষ্টি মহলে উদাসীনতায় সইে সম্ভাবনা তমিরিে রয়ে যাচ্ছ।ে দৃশ্যমান উদ্যোক্ততার অভাবে সম্ভাবনার দ্বারকে উম্মচেতি করা সম্ভব হচ্ছে না, উপকূলবাসীকে তাদরে আত্মচতেনা উজীবতি হয়ে সোচ্চার ও দক্ষতার পরচিয় দয়িে এগয়িে যতেে হবে উপকূল একটি সমৃদ্ধি বাংলাদশেরে পথ সুগম করব।ে গত ২৯ এপ্রলি চট্টগ্রাম প্রসেক্লাবে ৯১ সনরে র্ঘুণঝিড়ে নহিতদরে স্মরণে উপকূলীয় উন্নয়ন ফাউন্ডশেন এর সমেনিার ও দোয়া মাহফলিে বক্তারা একথা বলনে, অনুষ্ঠানে সভাপতত্বিে করনে সংগঠনরে সভাপতি চট্টগ্রাম বশ্বিবদ্যিালয়রে ফরস্টে ডর্পিামন্টেরে প্রফসের ড. মো কামাল হোসাইন। প্রধান অতথিি ছলিনে র্সাদান ইউনভিারসটিি ডসিি প্রফসের ড. নুরুল মোস্তাফা, সমেনিাররে মুল প্রবন্ধ পাঠ করে সংগঠনরে ভাইস চয়োরম্যান ড. অধ্যক্ষ মো সানাউল্লাহ। সংগঠনরে মহাসচবি আকবর খানরে সঞ্চালনায় আরো বক্তবো রাখনে-কুতুবদয়িা সমতিরি সভাপতি ডা. ফজলুল হক, চকরয়িা সমতিরি সভাপতি লায়ন সতোরা গাফফার, প্রফসের নছরুল কদরি, শাহজাদা মুনরিুল মান্নান, মো. সামশুউদ্দনি, এড কবি হোসাইন, খললি উল্লাহ চৌধুরী সাকবি, মাহবুব উল মাওলা রপিন, মাওলানা জয়নাল আবদেীন কুতুব প্রমুখ।
উপকূলীয় এনজিও জোট :
শনিবার সকালে কক্সবাজার আদালত সড়কে ‘ভয়াল ২৯ এপ্রিল ১৯৯১’ -স্মরণে মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা এসব অনুভূতির কথা প্রকাশ করেন।
এতে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন উপকূলীয় (মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসন) এলাকার এমপি আশেক উল্লাহ রফিক।
তিনি বলেন, এক সময় ত্রাণের জন্য পাগল ছিল উপকূলের মানুষ। ঝড়-বাতাস বইলে খুশি হতো। এখন টেকসই বেড়িবাঁধ চায় উপকূলের বাসিন্দারা।
উপকূলীয় এনজিও জোটের ব্যানারে আয়োজিত ‘উপকূলের জমি ও মানুষের সুরক্ষায় পানি উন্নয়নবোর্ডের সংস্কার জরুরী’ শ্লোগান সম্বলিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন কোস্ট ট্রাস্টের প্রকল্প সমন্বয়কারী মকবুল আহমেদ।
সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন- কুতুবজুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন খোকা, মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার এর সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক মুহম্মদ নুরুল ইসলাম, কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কবি রুহুল কাদের বাবুল, এক্সপাউরুলের প্রধান নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার কানন পাল।
কোস্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় সভায় সংহতি জানান কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, এনজিও সংগঠক সাইফুল ইসলাম কলিম, হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম, কুতুবদিয়া ছাত্র পরিষদের সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন কবির সিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুখ দিনার, এনটিভি কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি ইকরাম চৌধুরী টিপু, এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধি মোয়াজ্জেম হোসেন শাকিল, দৈনিক রূপালী সৈকত ও কক্সবাজার নিউজ ডট কম (সিবিএন) এর বার্তা সম্পাদক ইমাম খাইর।
এছাড়া উপকূলীয় এনজিও জোটের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়নবোর্ডের সংস্কারসহ দ্বীপ ভাঙন ও প্লাবনরোধে স্থায়ী সমাধানে ৮টি দাবী পেশ করা হয়।

দাবীসমূহ হলো- ১) নদীর তলদেশ থেকে তীরের উচ্চতা পর্যন্ত ব্লক স্থাপন ২) টেন্ডারিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা প্রতিষ্টা ৩) সেনাবাহিনীকে কাজে যুক্তকরণ ৪) জনঅংশগ্রহনের সুযোগ রাখা ৫) চলামান কর্মকান্ড বিষয়ে সকল তথ্য জনগণের সম্মুখে প্রকাশ ও প্রচার করার ব্যবস্থা করা এবং অভিযোগ ব্যবস্থাপনার সুযোগ নিশ্চিত করা ৬) পানি উন্নয়নবোর্ডে দায়িত্বপ্রাপ্তদের জনমুখি মনোভাব গড়ে তোলা এবং জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকারের নিকট জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ৭) পানি উন্নয়নবোর্ডের চলমান কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও নিরীক্ষা ৮) ম্যানগ্রোভ বন সৃষ্টি।

কুতুবদিয়া :
কুতুবদিয়ায় উপকূলের জমি ও মানুষের জীবন রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছে উপকূলীয় এনজিও জোট,কক্সবাজার। গতকাল ২৯ এপ্রিল উপজেলা পরিষদের সামনে সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারটা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন কোস্ট ট্রাস্টের সিএফটিএম প্রকল্পের নুরুল আবছার। আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন, কৈয়ারবিল ইউপির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, লেমশীখালী ইউপির চেয়ারম্যান আকতার হোছেন, এডভোকেট আইয়ুব হোছাইন, ফ্রেন্ডশীপের প্রজেক্ট ম্যানেজার আহাদ আলী মৃধা জুয়েল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম লালা, সাংবাদিক হাসান কুতুবী, এম.নজরুল ইসলাম, ইফতেখার শাহজীদ রোকন, বিভিন্ন ইউপি সদস্য, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানগণসহ উপকূলের বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাঁচার অধিকার আমাদের মৌলিক অধিকার। আমারা শঙ্কিত হয়ে নয়, নির্বিঘ্নে বাঁচতে চায়। এপ্রিল মাস আসলেই আমাদের মনে জেগে উঠে স্বজন হারানোর পুরনো স্মৃতি। একমাত্র স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকার কারনে সে দিন আমারা আমাদের প্রিয় জনদের হারিয়েছি। আমারা আর কাউকে হারাতে চাই না। আমারা স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই। আর সেই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতাসহ পাউবোর টেন্ডারিং প্রক্রিয়ার ও তদারকির ক্ষেত্রে জন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাসহ চলমান কর্মকান্ড নিয়ে সকল প্রকার তথ্য জনসমূক্ষে প্রকাশ,প্রচার ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া বক্তারা দ্বীপের চারপাশে ম্যানগ্রোভ বন সৃজনের প্রতি জোর দাবী জানিয়ে বলেন, গুটি কয়েক বন ও ভূমি দস্যুদের জন্য দ্বীপের দেড় লক্ষ মানুষ গৃহ হারা হতে পারে না। যাদের দ্বারা জনস্বার্থের ক্ষতি হয় তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক। আর দ্বীপ রক্ষায় দল বল নির্বিশেষে এক কাতারে এসে আনন্দোলনে লিপ্ত হোক।

ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ:
ভয়াল ২৯শে এপ্রিল ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্মরণে মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা ইউনিয়নের শরইতলা সাগরপাড়ে ২৯ শে এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার সময় ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে শোক র‌্যালি ও মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। শোক র‌্যালি ও মানববন্ধন অনুষ্ঠানটি ধলঘাটার চেয়ারম্যান কামরুল হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাঈদুল ইসলাম,ইউনিয়ন পরিষদেও সদস্যগণ, স্থানীয় আওয়ামীলীগ,যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যদান কালে ধলঘাটার চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার ধলঘাট,মাতারবাড়ি ও কুতুবজোম ইউনিয়ন লন্ডভন্ড হয়ে যায় এবং হাজার হাজার মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এসময় বসতবাড়ি ভেঙ্গে গিয়ে গৃহহারা হয়ে পড়ে কুতুবজোম,মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। পরে ১৯৯৭, ৯৮, সালে আরো দু’টি বড় বড় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে উপকূলে। এরপর সিডর, বিজলী,আইলা ও রোয়ানু, নার্গিজ আঘাত হানে মহেশখালী উপকূলে। এতে অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যায়। এরপর অনেকেই পুণরায় বসতবাড়ি তৈরি করে বসবাস শুরু করলে ও যাদের সম্বল নেই,তারা বেড়িবাঁধের বাইরে ঢালু ও চর এলাকায় বাঁেশর তৈরি ছোট্ট ছোট্ট ঝুপরী ঘরে মৃত্যুর ঝুঁিক নিয়ে বসবাস করছে।

প্রতি বছর ঘোরে ফিরে ২৯শে এপ্রিল তারিখ আসলে ভিবিষিকাময় কাল রাত্রির কথা মনে পড়ে এবং দীর্ঘ ২৭টি বছর বুকে লালন করছে স্বজন হারা মানুষ।

চেয়ারম্যান আরো বলেন, ধলঘাটা ইউনিয়ন রক্ষার টেকসই বেঁড়িবাঁধ নির্মাণ করে উপকুলবাসিকে বাঁচাতে হবে। টেকসই বেঁড়িবাঁধ নির্মাণ না হলে জোয়ার ভাটার কবলে পড়ে গৃহহারাহয়ে পড়বে হাজার হাজার মানুষ। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে ধলঘাটা রক্ষার টেকসই বেঁড়িবাঁধ নির্মাণ এর দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে ধলঘাটাবাসি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!