চট্টগ্রামের হালিশহরের বড়পোল মোড় এলাকায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ‘বজ্রকণ্ঠ’ পড়ে আছে অযত্নে, অবহেলায়। দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যটি এখন ধুলোর প্রলেপে ঢেকে আছে। আশপাশের নোংরা পরিবেশ। সামনে গড়ে ওঠা টং দোকানে চলে চা-সিরাগেটের আড্ডা। এটি পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের হলেও সংস্থাটিকে এ দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি।
সোমবার (১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গিয়ে ভাষ্কর্যটির বেহাল অবস্থা দেখে ক্ষোভ ঝেড়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
তাদের অভিযোগ, আগস্ট শুরুর প্রথম প্রহর থেকেই দলীয় নেতা কর্মীরা শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন ভাষ্কর্যটির সামনে। কিন্তু এত এত শ্রদ্ধা ও ফুলের তোড়ার সামনে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্যটিতে ফুটে উঠেছে অযত্ন-অবহেলা।
তারা মনে করেন, যেহেতু এই ভাষ্কর্যটি পরিচর্চার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের সেহেতু তারা অন্তত আগস্ট মাসে হলেও একটু পরিষ্কার করতে পারতো। এই অব্যবস্থাপনার কাজের দায় চসিক কোনোভাবেই এড়াতে পারেনা।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈমউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চসিক জানতো যে আমরা আজ এখানে ফুল দিতে আসবো। আগস্ট মাস হিসেবে ভাষ্কর্যটি পরিষ্কার রাখা তাদের উচিত ছিল। তাদেরকে একাধিকবার বলার পরও তারা বিষয়টি কর্ণপাত করেনি।।’
তিনি আরও বলেন, ‘চসিকের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও আমরা গতকাল বলে রেখেছিলাম। কিন্তু তারা পরিষ্কার করবে বললেও শেষ পর্যন্ত তা করেনি। চসিকের মেয়র আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে আছেন। তার উচিত ছিল এ বিষয়টি নিয়ে একটু সজাগ থাকা।’
অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা জানতে চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
স্থানীয়রা জানান, যেহেতু এই ভাস্কর্যটি মুল সড়কের পাশে তাই তাতে ময়লা বা ধুলো জমা স্বাভাবিক। কিন্তু এত টাকা খরচ করে যেহেতু ভাস্কর্যটি বানাতে পেরেছে তাহলে পরিচর্চার জন্য অল্প কিছু খরচ করলেই হয়ে যায়। অন্তত বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে হলেও যেন তারা এই ভাস্কর্যের যত্ন করতে পারে।
জানা গেছে, ভাস্কর্যটির সার্বক্ষনিক পরিচর্যার জন্য চসিকের তিনজন কর্মচারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা তিন শিফটটে ২৪ ঘণ্টা এটির পরিচর্যা র দায়িত্বে থাকেন। কাগজে কলমে দায়িত্ব বন্টন করা থাকলেও তাদের পরিচর্চার কাজে দেখা যায় না। এমনকি ভাস্কর্যটির সামনে ভাসমান টং এর দোকান গড়ে উঠেছে।
২০২০ সালে চসিকের তৎকালীন মেয়র আজম নাছির উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে ৮৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৬ ফুট উঁচু এই ভাস্কর্যটি বানানো হয়। যার নাম দেওয়া হয় ‘বজ্রকন্ঠ’।
এমএফও