শেষ রাতে চিরতরে চলেই গেলেন বাংলাদেশের লম্বা মানুষটি

বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘকায় ব্যক্তি হিসেবে কক্সবাজারের জিন্নাত আলী ওয়েবের যেখানে যেখানে ছিলেন, আর একটু পরেই সেখান থেকে তার নামটি মুছে যাবে চিরতরে। সেটিই স্বাভাবিক, কারণ মাথায় টিউমার নিয়ে অশেষ কষ্টে ভুগে চিরতরে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন জিন্নাত আলী নিজেই।

মাত্র ২৪ বছর বয়সেই জীবনের কাছে হেরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন কক্সবাজারের বাসিন্দা বাংলাদেশের সবচেয়ে লম্বা মানুষ এবং তুরস্কের সুলতান কোশেনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘকায় ব্যক্তি জিন্নাত আলী। মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত তিনটায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জিন্নাত আলীর মৃত্যুর খবর তার ভাই ইলিয়াস আলী ভোর ৪টায় চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন।

শেষ রাতে চিরতরে চলেই গেলেন বাংলাদেশের লম্বা মানুষটি 1

কান্নাজড়িত কন্ঠে ইলিয়াস আলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার ভাই জিন্নাত আলী আর নেই। উনার জন্য দোয়া করবেন সবাই। খুব কষ্ট নিয়ে চলে গেল আমাদের সবাইকে ছেড়ে। আমি খুব অসহায় অবস্থায় পড়ে গেছি। পারলাম না ভাইকে বাঁচাতে।’

জিন্নাত আলী দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টসহ মস্তিষ্কে টিউমার জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এর আগে পাঁচদিন কক্সবাজার মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৬ এপ্রিল তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার (২৭ এপ্রিল) শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকার ঘন্টাখানেক পরেই তিনি মারা যান।

কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল গ্রামের আমির হামজার ছেলে জিন্নাত আলী। ১৯৯৬ সালে তার জন্ম। ছিলেন পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান। ১১ বছর বয়স থেকে জিন্নাত আলীর শরীরের উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে লম্বা মানুষ।

সোমবার (২৭ এপ্রিল) রাতে জিন্নাত আলীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. খুরশিদ আনোয়ার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেছিলেন, ‘জিন্নাত আলীর কন্ডিশন খুবই ক্রিটিকাল। দুপুরে এখানে ভর্তি হয়েছেন। আইসিইউর জন্য বলেছিলাম, চেষ্টা চলছে। উনার ব্রেইন টিউমার অনেকটা এডভান্সড স্টেজে রয়েছে। সাথে ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্ট থাকায় শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে রোগীর অবস্থা জটিল।’

ওই সময় নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. নোমান খালেদ চৌধুরীও জানিয়েছিলেন, ‘দুপুরে জিন্নাত আলীকে ডিপার্টমেন্টে আনা হয়েছে। তার কন্ডিশন ক্রিটিকাল। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’

এসআর/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!