শেষ বেলায় প্রোটিয়ারা জ্বলে ওঠায় নিভে গেলো লঙ্কানদের আলো

শেষ বেলায় প্রোটিয়ারা লঙ্কানদের সব আলো নিভিয়ে দিয়ে নিজেদের চারপাশ আলোকিত করলেন। গাণিতিক হিসাবে লড়াইয়ে টিকে ছিল শ্রীলঙ্কা! সম্ভাবনাটা ভাল করে বাঁচিয়ে রাখতে শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় জরুরী ছিল লঙ্কানদের। কিন্তু দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া সেই দলটিকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে প্রোটিয়ারা। যদিও আগেই সেমি-ফাইনালের লড়াই থেকে ছিটকে গেছে ফাফ ডু প্লেসিসের দল।

চেস্টার-লি-স্ট্রিটের দা রিভারসাইড ডারহামে দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটি জিতেছে অনায়াসে ৯ উইকেটে। হাশিম আমলা ও ডু প্লেসিসের হাফসেঞ্চুরিতে হাতে ৭৬ বল রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর করে দলটি। স্বস্তির এই জয়ে মুখ রক্ষা হলো দলটির!

শেষ বেলায় প্রোটিয়ারা জ্বলে ওঠায় নিভে গেলো লঙ্কানদের আলো 1
প্রথম দেখায় মনে হতে পারে সবাই মাঠে শুয়ে একটু জিরিয়ে নিচ্ছে। ব্যাপারটি আসলে মাঠে হঠাৎ মৌমাছির আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য।

শুক্রবার টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। তারা ৪৯.৩ ওভারে অলআউট হয়ে তুলে মাত্র ২০৩ রান। জবাব দিতে নেমে ৩৭.২ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে হাসিমুখে মাঠ ছাড়ে প্রোটিয়ারা।

এই হারেও অবশ্য লঙ্কানরা বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছে এমনটা সরাসরি বলা যাচ্ছে না। কারণ ৭ ম্যাচে দুই জয় (আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে); দুই হারে (নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে) ৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে লঙ্কানদের দুটি ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি বৃষ্টির কারণে। ফলে দুটি পয়েন্ট এমনিতেই পেয়ে যায় তারা। এ অবস্থায় শেষ দুই ম্যাচে জিতলে সেমিতে উঠতেও পারে এই দ্বীপ দেশটি।

অন্যদিকে ৮ ম্যাচে ২ জয় (আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) আর ৫ (ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে) হারে ৫ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

শেষ বেলায় প্রোটিয়ারা জ্বলে ওঠায় নিভে গেলো লঙ্কানদের আলো 2
শেষ বেলায় এসে নিজেদের আলোকচ্ছটা দেখালো দক্ষিণ আফ্রিকা

দূর্ভাগ্যই বলতে হবে হাশিম আমলা ও ফাফ ডু প্লেসিসের। দুই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানই পেতে পারতেন শতরান। কিন্তু শ্রীলঙ্কার সংগ্রহটা কম বলেই সেঞ্চুরির সুবাস নিয়েই মাঠ ছাড়েন দু’জন। দলীয় ৩১ রানে কুইন্টন ডি কক (১৫) বিদায় নিতেই আমলার সঙ্গে জুটি বাধেন ডু প্লেসিস। এরপর দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তারা।পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ১০৫ বলে ৮০ রানে অপরাজিত থাকেন আমলা। আর ডু প্লেসিস মাত্র ৪ রানের আক্ষেপে সাজঘরে ফেরেন। তার ব্যাট থেকে আসে ১০৩ বলে ৯৬ রান।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে সুপার ফ্লপ শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। ম্যাচের প্রথম বলেই অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নেকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন কাগিসো রাবাদা। তারপর অবশ্য লড়ছিলেন কুসল পেরেরা ও আভিশকা ফার্নান্দো। কিন্তু ৬৭ রানের জুটি ভাঙেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। ৩০ রানে ফেরেন কুসল। আর আভিশকার ব্যাটেও সমান রান। তারপর হতাশা নিয়েই ফেরেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, জিবন মেন্ডিস, থিসারা পেরেরা, ইসুরু উদানা। দলও পায়নি বড় সংগ্রহ।

ক্রিস মরিস ৪৬ রানে নেন ৩ উইকেট। কাগিসো রাবাদা ৩৬ রানে ২ উইকেট। তবে ২৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা প্রিটোরিয়াস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:-
শ্রীলঙ্কা: ৪৯.৩ ওভারে ২০৩/১০ (করুনারত্নে ০, কুসল পেরেরা ৩০, ফার্নান্দো ৩০, কুসল মেন্ডিস ২৩, ম্যাথুজ ১১, ডি সিলভা ২৪, জিবন মেন্ডিস ১৮, থিসারা ২১, উদানা ১৭, লাকমল ৫*, মালিঙ্গা ৪; রাবাদা ২/৩৬, মরিস ৩/৪৬, প্রিটোরিয়াস ৩/২৫, ফেলুকোয়ায়ো ১/৩৮, ডুমিনি ১/১৫)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩৭.২ ওভারে ২০৬/১ (ডি কক ১৫, আমলা ৮০*, ডু প্লেসিস ৯৬*; মালিঙ্গা ১/৪৭)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!