শেখ হাসিনা চান মোশাররফকে, মোশাররফ চান রুহেলকে

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বর্তমান বয়স ৭৭ বছর। রাজনৈতিক পথচলায় তাঁর বন্ধু হিসেবে পরিচিত আতাউর রহমান খান কায়সার, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু, মহিউদ্দিন চৌধুরীরা পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। আওয়ামী লীগে এখন তারুণ্যের যে জোয়ার চলছে তাতে বলতে গেলে প্রাচীন বটবৃক্ষের মত মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন দলের প্রবীণ এই নেতা। গত দুই মেয়াদে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী এই ফোরামের সদস্য হিসেবে আছেন তিনি। কিন্তু বয়সের কারণে এবার আর সেই সুযোগ থাকছে কিনা তা নিয়ে কিছুটা সংশয় ছিল সব মহলেই। তবে সে সংশয়েরও অবসান হলো, আরও এক মেয়াদে মোশাররফকে প্রেসিডিয়ামে চাইছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

দুজনের সর্বশেষ সাক্ষাতেও এই বিষয়ে আলাপ হয়েছে। যেখানে শেখ হাসিনা মোশাররফে আরও একবার প্রেসিডিয়ামে রাখার ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন বলে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানিয়েছে সেখানে উপস্থিত থাকা একজন আওয়ামী লীগ নেতা।

গত ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে নিয়ে গণভবনে শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। সেই সাক্ষাতে আসন্ন জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেই সভায় উপস্থিত একজন নেতা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, “আলাপচারিতার এক ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী মোশারফ ভাইকে বলেন, ‘আপনি এবারও প্রেসিডিয়ামে থাকবেন’ জবাবে মোশাররফ ভাই বলেন, ‘আমার বয়স হয়েছে নেত্রী, আপনি রুহেলকে একটু দেখুন’। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, রুহেলেরটা দেখা যাবে, কিন্তু আপনাকে এবারও প্রেসিডিয়ামে দরকার আছে’।”

এসময় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান আতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সন্দ্বীপের সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতা ও সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালাম।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান আতা বলেন, ‘দুই মেয়াদে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে কাজ করছেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এবারও তিনি প্রেসিডিয়ামে থাকছেন।’

প্রসঙ্গত, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামের মিরসরাই আসন থেকে ৬ বারের নির্বাচিত সাংসদ। ১৯৭৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বাকশাল এবং ৭৭ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ১৯৮০ ও ৮৪ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০৪ এবং ২০১২ সালে সভাপতি এবং একই সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একজন সৎ, ভদ্র, নম্র, স্পষ্টবাদি ও উদার মনোভাবের মানুষ হিসেবে নিজ দলের নেতাকর্মীসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের নিকট তার সুনাম রয়েছে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!