শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু—সৎ মায়ের নির্যাতন নাকি দুর্ঘটনা

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চিকিৎসক দেয় মৃত্যুর ঘোষণা। এরপর থেকে মৃত্যু থেকে নিয়ে ঘটে নানা গল্পের আবির্ভাব। সৎ মায়ের দাবী চট্টগ্রাম দেওয়ানহাট সুপারিপাড়ার বিবলুর মেয়ে ইকরা (১২) খেলতে গিয়ে জানালার গ্রিলে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা গেছে। নানার অভিযোগ সৎ মায়ের নির্যাতনেই তার নাতনীর মৃত্যু। ইকরা কি খুন হয়েছে নাকি সে দুর্ঘটনার শিকার- এই প্রশ্নের উত্তর মিলাতে পুলিশকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য।

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসাপাতালে মারা যায় ইকরা।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দেওয়ানহাট সুপারিপাড়ার ওসমান ফারুক বিবলুর সাথে ইকরার মায়ের বিয়ের ৫ বছর পর ডির্ভোস হয়ে যায়। আইনী অধিকারের মারপ্যাঁচে মেয়েকে নিজের কাছেই নিয়ে আসেন ওসমান ফারুক। এরপর ওসমান আরেকটা বিয়ে করেন। সে থেকেই ইকরার ভাগ্যে নেমে আসে শুধুই বিভীষিকা। প্রতিদিন সৎ মার কাছে নির্যাতনের শিকার হতে থাকে ১২ বছরের শিশু ইকরা।

এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত রক্তপাতে সন্ধ্যা ৭টায় মেডিকেলেই তার মৃত্যু হয় তার।

ইকরার নানা নুর মোহাস্মদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দেওয়ানহাট সুপারিপাড়ার ওসমান ফারুক বিবলুর সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের ৫ বছর পর তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। ওসমান মাদকাসক্ত ছিল না। আমার মেয়েকে অনেক মারধর করতো সে। ইকরা তাদের সন্তান।’

তিনি বলেন, ‘ডির্ভোসের পর আমার নাতনিকে জোর করে ওসমান নিয়ে যায়। পরে আরেকটা বিয়ে করে সে। ইকরা সৎ মায়ের ঘরে অনেক নির্যাতিত হয়। কয়েকদিন আগে আমাকে কল করে ইকরা জানিয়েছে তাকে খুব মারধর করে তার সৎ মা। কিভাবে মারধর করে আশপাশের মানুষ তা দেখেছে। কাল আমার নাতনিকে মেরেই ফেললো। তারা পুলিশ কে না জানিয়ে দাফনের সিদ্বান্ত নিয়েছিল। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ লাশ নিয়ে যায়। কিন্তু আমি থানায় মামলা করতে গেলে থানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি আমার নাতনির হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই প্রশাসনের কাছে।’

ডাবলমুরিং থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এটা এখনো বলা যাচ্ছে হত্যাকাণ্ড নাকি দুর্ঘটনা। সৎ মায়ের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তিনি বলছেন, মেয়ে খেলতে গিয়ে জানালার গ্রিলের সাথে আঘাত পায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিশুটির লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেলের পাঠানো হয়ে ময়নাতদন্তের জন্য। সেই রিপোর্টের উপর নির্ভর করবে এই ঘটনার মূল কারণ। বর্তমানে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে।’

আরএ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!