শিশুর পুরুষাঙ্গ কেটে হাতুড়ে ডাক্তার এখন হুমকি দিচ্ছেন উল্টো

খৎনা করানোর সময় ৮ বছরের শিশুর পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেছে এক পল্লী চিকিৎসক। এ ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শিশুটি এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে হাসপাতালের শয্যায়। এদিকে ওই পল্লী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করার পর শিশুটির পরিবারকে উল্টো হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

মহেশখালী উপজেলার ছোট মহেশখালীর সিপাহীর পাড়ার মেসার্স ‘জাহেদ মেডিকো’তে গত ২৮ নভেম্বর এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা মো. মঞ্জুর আলম (৩৮) বাদী হয়ে পল্লী চিকিৎসক জয়নাল আবেদীনকে (৩৫) প্রধান এবং তার সহযোগী মিজানুর রহমানকে (২৮) দ্বিতীয় আসামি করে গত ৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদী শিশুটির বাবা মো. মঞ্জুর আলম মহেশখালীর গোরকঘাটা পুটিবিলার আবুল কাশেমের ছেলে। আর মামলায় প্রধান আসামি জয়নাল আবেদীন ওই উপজেলার ছোট মহেশখালী সিপাহীর পাড়ার মো. ইসলামের ছেলে এবং মামলার দ্বিতীয় আসামি মিজানুর রহমান ওই পল্লী চিকিৎসকের ছোট ভাই ও সহযোগী।

জানা গেছে, মঞ্জুর আলমের ৮ বছরের সন্তানের খৎনা করানোর সময় কাঁচি দিয়ে পুরুষাঙ্গের বড় অংশ কেটে ফেলেন পল্লী চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন। এ সময় তার সন্তান অজ্ঞান হয়ে যায় এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কক্সবাজার শহরের প্রাইভেট হাসপাতাল ফুয়াদ আল খতিবে ভর্তি করা হয়।

সেখানে তিনদিন চিকিৎসার পরেও সন্তানের কোনো উন্নতি না হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তিন দিন চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রামেই আরেকটি প্রাইভেট হাসপাতাল ‘এভার কেয়ার’এ ভর্তি করা হয়। কিন্তু ওই হাসপাতালে একদিন চিকিৎসার পর খরচ যোগাতে না পেরে ছেলেকে নিয়ে মহেশখালীতে ফিরে যান বাবা। এরপর থেকে বাড়িতে রেখে যতটুকু পারেন চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। গত ১৪ জানুয়ারি আবার চট্টগ্রামের ‘এভার কেয়ার’ হাসপাতালে নেওয়ার কথা থাকলেও টাকার অভাবে তা সম্ভব হয়নি।

বর্তমানে বাবা মঞ্জুর আলম ঋণ নিয়ে শিশুটিকে চিকিৎসা করানো হচ্ছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

এদিকে শিশুটির এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা হওয়ার পরেও পল্লী চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন কোনো সহযোগিতা করছেন না। সন্তানের এই দুরবস্থার কারণে বাবা-মা অসহায় হয়ে পড়েছেন।

শিশুটির বাবা মঞ্জুর আলম জানান, ওই চিকিৎসক কোনো সহযোগিতা করছেই না। বরং হুমকি দিচ্ছে এ ব্যাপারে বেশি বাড়াবাড়ি করলে অপহরণ মামলা দিয়ে আমাদের ফাঁসানো হবে।

শিশুটির মা রাশেদা খানম বলেন, ‘এখনো জানি না আমার সন্তান আদৌ বাচঁবে কি না? কোনো ক্ষতিপূরর্ণ চাই না। বিচার চাই। যাতে এই ভুয়া চিকিৎসকের হাতে আর কোনো মায়ের সন্তানের এমন অবস্থা না হয়।’

জানা গেছে, জয়নাল আবেদীন সার্টিফিকেটধারী পল্লী চিকিৎসকও নন। তিনি একজন হাতুড়ে। এক চিকিৎসকের সহযোগী থেকে নিজেই চিকিৎসক বনে গেছেন তিনি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!