শিরোপা-উল্লাস করতে গিয়ে প্রথম হারের স্বাদ পেল বসুন্ধরা কিংস

সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে শিরোপা জয়ের প্রস্তুতি ছিল বসুন্ধরা কিংসের। শেখ রাসেলের বিরুদ্ধে জিতলেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক আসরেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারতো ঘরোয়া ফুটবলের নতুন পরাশক্তিরা। কিন্তু যে ম্যাচে উৎসবের প্রস্তুতি ছিল তাদের, সেই ম্যাচ হেরেই গেলো। টানা ১৪ জয় আর ২০ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর প্রথম হারলো বসুন্ধরা কিংস।

শনিবার সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংসকে হারের তেঁতো স্বাদ দিয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। শিরোপা লড়াই থেকে আগেই ছিটকে যাওয়া ব্লুজরা এ ম্যাচ জিতে বসুন্ধরার শিরোপা জয়ের উৎসবকে বিলম্বিত করলো। বাকি ৩ ম্যাচের একটি জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হবে লাল জার্সিধারীরা।
প্রথমবার এসেই প্রিমিয়ার লিগে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাস পাচ্ছিল বসুন্ধরা কিংস। অনেকে ধরেই নিয়েছিল কোনো পরাজয়ের স্বাদ না নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে করপোরেট ক্লাবটি। ২০০৩-০৪ মৌসুমে অপরাজিত থেকে যেভাবে ইংলিশ লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্সেনাল। ২০১১-১২ মৌসুমে জুভেন্টাসও দেখিয়েছিল এমন কিছু।

বসুন্ধরার তেমন কিন্তু করে দেখানো হলো না। কিছু আশা অপূর্ণই থেকে যায়। বসুন্ধরারও হলো তাই। লিগ শিরোপা হয়তো তাদের হাতেই উঠবে। কিন্তু অপরাজিত থেকে শিরোপা জয় করার বড় আশাটা পূরণ হলো না আর। আজ শেখ রাসেলের কাছে ১-০ গোলে হেরে যাওয়ায় সে আশায় গুঁড়েবালি।

শিরোপা জয়ের আশা নিয়েই সিলেটে গিয়েছিল বসুন্ধরা। শনিবার (২০ জুলাই) জিতলেই তিন ম্যাচ হাতে রেখে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হতে পারত তারা। উল্টো ১-০ গোলে হেরে শিরোপার অপেক্ষা বাড়াল। তাদের স্বপ্নে আঘাত হেনেছেন রাসেলের উজবেকিস্তানের স্ট্রাইকার আলিশর আজিজব। ৫২ মিনিটে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলটি করেছেন উজবেক এই স্ট্রাইকার। লিগে এটিই প্রথম হার বসুন্ধরার। আর এই জয়ে ২১ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে আসল শেখ রাসেল।
bangladesh-premier-league
আজকের ম্যাচের আগে মনে করা হচ্ছিল লিগ শিরোপা আর বসুন্ধরা কিংসের মধ্যে বন্ধুত্ব কেবলই সময়ের ব্যাপার। হাতে আছে চার ম্যাচ। যে কোনো একটি জিতলেই শিরোপা চলে যাবে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। কিন্তু চার ম্যাচের চিন্তা কে করেছে, আজই শিরোপা বগলদাবা করে সিলেট থেকে ফিরতে চেয়েছিল দলটি। শিরোপা উল্লাসের সব রকম রসদই জমা করা ছিল সেখানে। শুধু জয়ের ঘণ্টা বেজে উঠলেই সিলেট থেকে শুরু হবে শিরোপা উৎসব। কিন্তু তা আর হলো না। মুহুর্মুহু আক্রমণ করেও আজ গোল পায়নি অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা। রাসেলের জমাট রক্ষণভাগ ছাড়া ভাগ্যও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শেষ বাঁশি বাজার আগেও সাইড পোস্টে লেগে বল ফিরে আসে।

বসুন্ধরা শেষ কবে জেতেনি, এটা এখন আর কেউ কষ্ট করে মনে করতে চায় না। সেই যে লিগের প্রথম পর্বে নোয়াখালীতে বিজেএমসির সঙ্গে ড্র করেছিল, এর পর টানা ১৪ জয়ে এরই মধ্যে প্রিমিয়ার লিগে জয়ের রেকর্ড গড়েছে দলটি। সিলেটে এ রেকর্ড ১৫ তম ম্যাচে নিয়ে যেতে পারলেই শিরোপা নিশ্চিত হতো বসুন্ধরার।

দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলে এবারই আবির্ভাব হয়েছে বসুন্ধরার। ফেডারেশন কাপে রানার্সআপ হলেও স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন। আর প্রিমিয়ার লিগেও শিরোপা চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। লিগ অভিযানে ২১ ম্যাচে ১২ গোল হজমের বিপরীতে গোল করেছে ৫০টি। আর ২১ ম্যাচে এক ড্র ও এক হার ছাড়া বাকি ১৯ ম্যাচেই জয়। দাপুটে এ পরিসংখ্যানই বলছে প্রতিপক্ষ দলের জন্য কতটা ভয়ংকর বসুন্ধরা। কিন্তু অপরাজিত থাকার গর্বটা ধরে রাখা গেল না।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!