শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে তামাকপণ্যের বিক্রয় নিষিদ্ধ করলেন মেয়র

সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একশ গজের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে স্থাপিত সকল তামাকের দোকান অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এতদ্বারা সকল তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতা ও পৃষ্ঠপোষকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে কোন প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা করা যাবে না। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ (২০১৩ সালের সংশোধনীসহ) এর বিধানমতে এসব কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতা ও পৃষ্ঠপোষকদের আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধ করার নিদের্শ দেয়া গেল। অন্যথায় উল্লেখিত তারিখের পর করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেল/জরিমানাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ ব্যাপারে সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন মেয়র।

এদিকে, ‘তামাকমুক্ত চট্টগ্রাম নগরী’ গড়তে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব থিয়েটার আর্টস, ক্যাব ও ইলমা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখ থেকে অক্টোবরের ১ তারিখ এবং অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে অক্টোবরের ৯ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব থিয়েটার আর্টস (বিটা) কর্তৃক নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় চিত্রের উপর একটি জরিপ চালায়। ওই জরিপ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, চট্টগ্রাম নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে ১০০ গজের মধ্যে তামাক পণ্য বিক্রি হয় এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮৮৫টি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ গজের মধ্যে বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৫৩৬টি। এছাড়া নগরীতে তামাকজাত বিক্রয়স্থল রয়েছে ১৬ হাজার ৫৯টি।

এরমধ্যে রাস্তার পাশে বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে ৩ হাজার ৩৯৪টি, চা বিক্রয় কেন্দ্র ৪ হাজার ৩০৫, ক্ষুদ্র মুদি দোকান ৫ হাজার ৮৭৯টি, সুপার মার্কেট ৯২৪টি, তামাক দ্রব্য বিক্রয়কেন্দ্র ৬৬৭ টি, রেষ্টুরেন্টে ১৯৬টি, ভাসমান বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে ৬৯৪ টি।

গত ১৫ নভেম্বর চসিকের কেবি আবদুচ সাত্ত্বার মিলনায়তনে সিটি মেয়রের উপস্থিতিতে এক সভায় এই জরিপের তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এরপর ১৫ এপ্রিল বিটা আয়োজিত ‘তামাকমুক্ত চট্টগ্রাম নগরী’র সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র ঘোষণা করেছিলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একশ গজের মধ্যে সকল তামাকের দোকান অপসারণ করা হবে। পরবর্তীতে সর্বশেষ ৩১ আগস্ট ক্যাব আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে মেয়র ঘোষনা দেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একশ গজের মধ্যে সকল ধরনের তামাকের দোকান অপসারণ করা হবে।

এই বিষয়ে চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আকতার জানান, ‘মেয়রের ঘোষণা অনুসারে গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সময়ের পর তামাক বিক্রেতাদের কোন ধরনের অজুহাত শোনা হবে না. আমরা সরাসরি একশনে যাবো।’

এমএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!