শিক্ষক ভালো না হলে শিক্ষার্থীদের কিভাবে পড়াবেন?

প্রশ্ন দুদক কমিশনারের

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষকদের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার (অনুসন্ধ্যান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান। শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক সমস্যা আছে উল্লেখ তিনি বলেন, ‘শিক্ষকেরা ভালো করে পড়ান না। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। ১৯৮৫-৮৬ সালের দিকে ডেকে ডেকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক ভালো না হলে শিক্ষার্থীদের কিভাবে পড়াবেন? শিক্ষার মান খুবই খারাপ হয়ে গেছে। শিক্ষাব্যবস্থার আরো উন্নতি হতে হবে।’ বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘দুুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময়’ সভায় দুদক কমিশনার এসব কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খান আরো মোজাম্মেল হক বলেন, ‘যেটা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর; সেটাই দুর্নীতি। দুর্নীতিবাজরা আমাদের চেয়ে উঁচু অবস্থানে ও সাথে আছে। নিচের স্তরে তেমন কেউ নেই। উপরের লোকেরা লক্ষ কোটি টাকার দুুর্নীতি করে।’

বক্তব্যে দুদক কমিশনার জানান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদকে যে সব অভিযোগ জমা হয়; তার মধ্যে শতকরা ৮০টি অভিযোগ সাধারণ প্রকৃৃতির। ১০টি অভিযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত। আর ১০টি অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত করে দুদক। কিভাবে অভিযোগ করতে হয়, তাও ভুক্তভোগীরা জানে না।

দুদকের সমালোচনা করে মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘এক হাজার ১০০ জনবল দিয়ে ১৭ কোটি মানুষের নজরদারি সম্ভব নয়। দুদকের কাজে অনেক ঘাটতি আছে। দুদকের এখনো অনেক কিছু করার বাকি আছে। করতে পারলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। তবে সর্ষের মধ্যে ভুত থাকলে চলবে না। দুদকের লোকেরা মানুষকে হয়রানি করলে হবে না।’

‘বাংলাদেশ এখন আর দাতা সংস্থার প্রেসক্রিপশনে চলে না। অনেক দেশ বাংলাদেশকে বিবেচনা করে, সমীহ করে।’ যোগ করেন তিনি।

ভারপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুুদ, চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার (উন্নয়ন) নুরুল আলম নিজামী, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্র্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম।

সভায় দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুুদ বলেন, ‘দুর্নীতি এক ধরনের আসক্তি। দুর্নীতি দমনে দুদকের ফান্ডের সীমাবদ্ধতা আছে।’

সভাপতির বক্তব্যে শংকর রঞ্জন সাহা বলেন, ‘নৈতিক চরিত্রের পরিবর্তন না ঘটলে দুর্নীতিকে কখনো নির্মূল করা সম্ভব নয়। দুর্নীতির মতো ক্যান্সার রোগে আমরা যাতে আক্রান্ত না হয়, এ ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে।’

বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবরিনা আফরিন মোস্তফার সঞ্চালনায় সভায় সূচনা বক্তব্যে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘পরিবার ও প্রাথমিক থেকে দুুর্নীতি প্রতিরোধ শুরু করতে হবে। বাচ্চাদেরকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতন করতে হবে; তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম দুর্নীতিমুক্ত হবে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন এবং দুুদক বিভাগীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সভায় দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপন করেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুুদ।

এতে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগণসহ বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!