শত্রুকে ফাঁসাতে ‘বন্ধু সংগঠনের’ অপকৌশল, পতেঙ্গায় ভাংচুর

ইভটিজিং, চাঁদাবাজি ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পতেঙ্গায় বন্ধু সংগঠন-৪ নামের একটি ক্লাবের সদস্যরা ওই ক্লাবেই রক্ষিত বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় তারা স্লোগান দিয়ে ক্লাবের টেবিল-চেয়ারসহ বিভিন্ন জিনিষপত্রও ভাংচুর করে।

ঘটনার সাথে জড়িতরা হলো সোহেল (২৬), সোহাগ (২৩), সাজু (২১), সাগর (১৯)। তারা পতেঙ্গা পশ্চিম মুসলিমবাদ এলাকার সৈয়দ আলমের পুত্র। এছাড়া রয়েছে মিসবাহ, সামির, আকাশ, কামবু। এরা সবাই পতেঙ্গার কথিত যুবলীগ নেতা ফরিদুল আলম ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ সভাপতি মো. মুছার অনুসারী বলে জানা যায়।

পশ্চিম মুসলিমাবাদ এলাকার বন্ধু সংগঠন-৪ নামের এই ক্লাবের সদস্যরা সবাই কিশোর গ্যাং হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এদের আরেকটি শাখা রয়েছে মাইজপাড়ায়। বেড়িবাঁধ এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, ৪ থেকে ৫ মাস আগে বন্ধু সংগঠন-৪ এর নামে উক্ত ক্লাবটির জন্য স্থানীয় জনৈক ফাতেমা বেগমের ঘরটি ভাড়া নেয় স্থানীয় যুবলীগের সোহেল গং। অভিযোগ রয়েছে ঘর ভাড়া নেওয়ার পর থেকে তারা ওই ঘরে বসে ইভটিজিংসহ নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এ অবস্থায় দুই মাসের বকেয়া ভাড়া পরিশোধ করে বাড়িওয়ালা তাদেরকে ঘরটি ছেড়ে দিতে বলে। এ ব্যাপারে থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়।

অভিযোগের পরিপ্রক্ষিতে পুলিশ দু’পক্ষের লোকজনকে থানায় ডাকলেও থানায় কেউ আসেনি। পরে পুলিশ ক্লাব সভাপতি সোহেলকে ক্লাবের চাবি দিয়ে দেয়। চাবি দেওয়ার পর ২৯ অক্টোবর রাত ২টার দিকে ক্লাবের ভেতরে ঢুকে ক্লাবের চেয়ার টেবিল আসবাবপত্র ও বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর চালানো হয়। বাড়িওয়ালাকে ফাঁসানোর জন্য এটা করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় বড়ভাইরা তাদের শেল্টার দিচ্ছে, জানায় স্থানীয়রা। এই বড়ভাইদের মধ্যে রয়েছেন পতেঙ্গা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. মুছা ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুল আলম।

এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. মুছা বলেন, বন্ধু সংগঠন-৪ এর সদস্য সোহেলের নেতৃত্বে যে ঘটনা ঘটে তার প্রেক্ষিতে তাদের ডেকে সাবধান করা হয়েছে। ৪০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুল আলম বলেন, আমি তাদেরকে (কিশোর গ্যাং) চিনি না। সামনে নির্বাচন করব, তাই প্রতিপক্ষের লোকজন ষড়যন্ত্রমূলক সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে আমাকে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বন্ধু সংগঠন-৪ এর সভাপতি মো. সোহেল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ক্লাব আমরা করেছি। আমরা ফরিদ ভাইয়ের রাজনীতি করি। আমাদের ক্লাবের উপদেষ্টা পতেঙ্গা থানার কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক মুছা ভাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে একজন ড্রাইভার। বন্দর-পতেঙ্গা এমপির লোকজনই মূলত আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

এ বিষয়ে পতেঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুবীর পাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, জমিদার ফাতেমা বেগমের অভিযোগের পরিপ্রক্ষিতে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’পক্ষের লোকজনকে থানায় ডাকলেও কেউ থানায় আসেনি। পরে ক্লাব সভাপতি সোহেলকে ক্লাবের চাবি দিয়ে দিয়েছি।

ভাংচুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারাতো কেউ থানায় আসেননি। তাই তাদেরকে চাবি না দিয়ে কাকে দেব! তবে এ ঘটনায় জমিদার ফাতেমা বেগম মামলা করতে চাইলে করবেন।

মুআ/সিআর

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!