লোহাগাড়ায় মাদকের ছড়াছড়ি : পুলিশী অভিযান অব্যাহত : প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে মাদক বিক্রেতা

সাত্তার সিকদার, লোহাগাড়া প্রতিনিধি :
লোহাগাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে ইয়াবা ও চোলাই মদের ব্যবহার। আনা গোনা বাড়ছে মাদক ক্রয়-বিক্রেতার। লোহাগাড়া থানা পুলিশ ও র‌্যাবের অব্যাহত অভিযানে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে মাদক বিক্রেতা। তবে ক্ষমতাশালী নেতা ও প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের ইশারায় তাদেরকে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। আইনের ফাঁক-ফোঁকড়ে বের হয়ে এসে পুনরায় লিপ্ত হচেছ মাদক ব্যবসায়।

উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্য চুনতি, আধুনগর, আমিরাবাদ ও পদুয়া ইউনিয়ন দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চলে গেছে। যাতায়ত করা এই সড়কে যানবাহনে প্রতিনিয়ত তল্লাশী চালিয়ে পুলিশ আটক করছে প্রচুর ইয়াবা ট্যাবলেট। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে চোলাই মদ ও গাজা ধরা পড়ছে পুলিশের হাতে।

4719_1

থানা সূত্রে জানা গেছে প্রতি মাসে প্রায় ১০ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট পুলিশের হাতে আটক হচ্ছে। আর চোলাই মদ আটক হচ্ছে ৩শ হতে ৪শ লিটার। এ ঘটনায় প্রতি মাসে ২৫/৩০ টি মামলা রুজু হচ্ছে।

এ ব্যাপারে মাদকের বিরুদ্ধে সব সময় সজাগ থাকা লোহাগাড়া মাদক বিরোধী ফেইসবুক গ্র“প “আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি”র এডমিন প্যানেল সদস্য মোঃ ওমর ফারুক প্রতিবেদকে জানান, আমি মাদক মুক্ত, আপনি মুক্ত তো.? এ শ্লোগান নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মাদক বিরোধী প্রচারনা করে যাচ্ছে। আমরা স্বপ্ন দেখি আমাদের লোহাগাড়ায় একদিন সম্পূর্ণ ভাবে মাদক মুক্ত হবে।

 

লোহাগাড়া মাদকের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি আরো জানান, আমাদের ফেইসবুক সদস্যদের তথ্য মতে লোহাগাড়ার স্টেশন পর্যায়ে মাদকের অবস্থান কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হলেও গ্রাম পর্যায়ে মাদকের ভয়াবহতা অব্যহত আছে। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে এলাকায় ঢুকছে চোলাই মদ। যারফলে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। লোহাগাড়া প্রশাসনে কাছে তাদের দাবী মহাসড়কের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে মাদকের মূল হোতাদের চিহ্নিত করে যেন আইনের আওতায় আনা হয়।

প্যানেল সদস্য, লোহাগাড়া কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও লোহাগাড়া শহর পরিচালনা কমিটির সদস্য মেছবাহ উদ্দীন রাজিব জনান, বর্তমানে দেশে মাদকের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। যার কারণে তারা ফেইসবুক গ্র“প সৃষ্টি করে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

মাদকের বিরুদ্ধে তাদের সচেতনা সৃষ্টির সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ফিজনুর রহমান, সাতকানিয়া সার্কেল মুফিজুর রহমান, কক্সবাজার-চকরিয়া সার্কেল কাজী মতিউর ইসলাম, ওসি শাহাজাহান পিপিএম ও এলাকার সচেতন মহল একাত্বতা প্রকাশ করেন। উপজেলার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাবের সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ ইলিয়াছ জানান, সমাজের অবক্ষয় ও পারিবারিক অশান্তির কারণে সমাজে মাদকের বিস্তার ঘটে। এছাড়াও মাদকের সহজ লভ্যতা পারিবারিক অনুশাসন ও ধর্মীয় অজ্ঞতার কারণে মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পায়।

 

মাদকের ভয়াবহতা থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। লোহাগাড়া থানা এস আই মোহাম্মদ সোলাইমান পাটোয়ারী জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে পাচার হওয়া ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকের বিরুদ্ধে তিনি নিয়মিত সোচ্চার থাকেন। মাদক পাচারকারীরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মাদক পাচার করছে। প্রতিনিয়ত তাদের হাতে আটক হচ্ছে ইয়াবাসহ প্রচুর মদ।

 

লোহাগাড়া ওসি মোঃ শাহাজাহান পিপিএম জানান, লোহাগাড়ায় মাদকের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এলাকায় মাদকের ব্যবহার জিরো টলারেন্সে নিয়ে আসতে পুলিশ বাহিনী সবসময় দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ফিজনুর রহমান জানান, সমাজে মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের পাশাপাশি সচেতন মহল ও জনপ্রতিনিধি গণের ভূমিকা অপরিসীম। এলাকার সচেতন মহল এগিয়ে আসলে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা পাবে একজন ব্যক্তি, একটি পরিবার, একটি সমাজ ও একটি রাষ্ট্র। মাদকের বিরুদ্ধে তিনি নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে থাকেন।

 

এ এস / জি এম এম / আর এস পি / এস এস :

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!