লোহাগাড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের

কোরবানির ঈদের বাকি আর মাত্র ৪ দিন। এ ঈদের অন্যতম কাজ হচ্ছে পশু কোরবানি করা। ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন লোহাগাড়ার কামার শিল্পের কারিগররা। কয়লার দগদগে আগুনে লোহাকে পুড়িয়ে-পিটিয়ে তৈরি করছেন সব ধারালো সামগ্রী। তবে এসব তৈরিতে এখনো আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া লাগেনি। পুরানো সেকালের নিয়মেই চলছে আগুনে পুড়ে লোহা হতে ধারালো সামগ্রী তৈরির কাজ।

মুসলিম ধমাবলম্বীরা আল্লাহকে খুশি করতে পশু জবাই করে থাকে। এই পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি। মাংস কাটা ও কোরবানির পশু জবাই করার বিভিন্ন ধাপে ছুরি, দা, চাপাতি এসব ব্যবহার করা হয়। তাই পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে কামার শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছে। দগদগে আগুনে গরম লোহা পিটাপিটিতে মুখর হয়ে উঠেছে লোহাগাড়ার কামার পল­ীগুলো। প্রস্তুত করছেন জবাই সামগ্রী। ঈদে শত শত গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ ইত্যাদি পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। এসব পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার চূড়ান্ত প্রস্তুত পর্যন্ত দা-বঁটি, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার আবশ্যকীয় হয়ে যায়। ঈদের আগেই পশু জবাই করার ছুরি, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি, চাপাতি, প্লস্টিক ম্যাট, চাটাই, গাছের গুঁড়িসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখতে হয়।

লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের দরবেশহাটে কামার শিল্পীদের প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮টি। প্রায় সবাই এখন কাজে ব্যস্ত। মিলন কর্মকার ও সুভাষ কর্মকার জানান, এসব ধারালো সামগ্রী মধ্যে ওজন ও প্রকারভেদে দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। দা প্রতিটি ৩০০-৬০০ টাকা। চুরি আকার ভেদে ৫০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। লোহাগাড়া বটতলী ও আধুনগর খান হাটসহ অন্যান্য হাটবাজারেও কামার কারিগরদের উৎপাদিত দা-চুরি বিক্রি করা হয়।

তারা আরো জানান, এ পেশায় অধিক শ্রম দিতে হয়। জীবিকা নির্বাহে কষ্ট হলেও শুধু বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশাটিকে তারা এখনও আঁকড়ে ধরে আছেন। বিভিন্ন সময় এসবের চাহিদা কম থাকলেও কোরবানির পশুর জন্য বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সকলেই এখন ছুটছেন কামারদের কাছে। আর এতেই এক মাসে পেশাটি জমজমাট হয়ে উঠেছে। তবে এসব সামগ্রী তৈরির উপকরণ কয়লা ও লোহার দাম বেশি হওয়ায় লাভের পরিমাণ কমে গেছে।

এদিকে ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্নস্থানে মৌসুমী কামারের দেখা মিলছে। তারা এলাকার বন্ধ দোকান ঘর এক মাসের জন্য ভাড়া করে অথবা খোলা জায়গায় বসে দা, ছুরি, চাকু তৈরি, শান ও মেরামত করতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করলেও ঈদের পরে আর তাদের দেখা মেলে না।

আমিরাবাদের আকতার হোসেন জানান, কোরবানির পশু জবেহ করা, মাংস কাটা ও চামড়া ছিলানোর জন্য ধারাল ছুরির প্রয়োজন। ঘরে থাকা দা, বঁটি ও ছুরিতে মরিচা থাকায় শানয়ের জন্য নিয়ে এসেছি। তবে অনেকে কোরবান উপলক্ষে নতুন সামগ্রী কিনতেও দেখা গেছে।’

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!